বৈষ্ণব পদাবলী অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর বাংলা অনার্সবৈষ্ণব পদাবলী অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর বাংলা অনার্স Bengali honours boishinob podaboli oti songkhipto questions answer
বৈষ্ণব পদাবলী অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর
বৈষ্ণব পদাবলী অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর বাংলা অনার্স
প্রশ্নের মান - ১/২
১। " গীত চন্দ্রদয় " পদ সংকলন টি কে প্রকাশ করে ?
উত্তর:- বিশিষ্ট পদকর্তা ও গ্রন্থ কার নরহরি চক্রবর্তী ।
২। " পদকল্পতরু " বৈষ্ণব পদ সংকলন গ্রন্থ টির প্রকৃত নাম কি ? গ্রন্থ টির সংকলক কে ?
উত্তর:- " গীতকল্পতরু " গ্রন্থটির সংকলক হলেন গোকুলানন্দ সেন ।
৩। " পদকল্পতরু " গ্রন্থে কতজন পদ কর্তার কত গুলি পদ স্থান পেয়েছে ?
উত্তর:- ১৩০ জন পদকর্তার চার হাজারেরও বেশী পদ স্থান পেয়েছে ।
৪। " রসকলিকা " গ্রন্থের সংকলক কে ?
উত্তর:- নটবর দাস ।
৫। " পদরত্নাকর " গ্রন্থের সংকলক কে ?
উত্তর:- কমলাকান্ত দাস ।
৬। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সম্পাদিত বৈষ্ণব পদ সংকলন গ্রন্থ টির নাম কি ? কবির সহযোগী সম্পাদক কে ছিলেন ?
উত্তর:- " পদরত্নাবলী " ১২৯২ বঙ্গাব্দে । কবির সহযোগী সম্পাদক ছিলেন শ্রীশচন্দ্র মজুমদার ।
৭। আদি বৈষ্ণব কবি কাকে বলা হয় ?
উত্তর:- " গীতগোবিন্দম " এর কবি জয়দেব কে ।
৮। " মৈথলীর কোকিল " কাকে বলা হয় ?
উত্তর:- মিথিলার বিশিষ্ট কবি বিদ্যাপতি কে ।
৯। বৈষ্ণব পদাবলী ছাড়া বিদ্যাপতি কি কি গ্রন্থ লিখেছিলেন ?
উত্তর:- কীর্তিলতা , কীর্তিপতাকা , ভু - পরিক্রমা , দুর্গাভক্তিতরঙ্গীনি , হরগৌরী বিষয়ক পদাবলী ।
১০। বিদ্যাপতির আদি নিবাস কোথায় ?
উত্তর:- বিহারের দ্বারভাঙ্গা জেলার মধুবনী পরগনার বিসফিগ্রামে ।
১১। বিদ্যাপতি কোন রানীর গুনমুগ্ধ ছিলেন ?
উত্তর:- রানী লোছমী দেবীর ।
১২। " দ্বিতীয় বিদ্যাপতি " কাকে বলা হয় ?
উত্তর:- গোবিন্দ দাস কে
১৩। ছোট বিদ্যাপতি কে ?
উত্তর:- বৈষ্ণব পদকর্তা কবিরঞ্জন ।
১৪। বড়ু চণ্ডীদাসের নিবাস কোথায় ? ইনি কোন দেবীর উপাসক ছিলেন ?
উত্তর:- বাঁকুড়া জেলার ছাতনা গ্রামে । বাশুলী দেবীর উপাসক ছিলেন ।
১৫। পদাবলীর চণ্ডীদাসের নিবাস কোথায় ? এর সাধন সঙ্গিনীর নাম কি ?
উত্তর:- বীরভূম জেলার নান্নুর গ্রামে । রামি ।
১৬। কোন কোন পর্যায়ের পদ রচনায় চন্ডীদাস শ্রেষ্ট ?
উত্তর:- পূর্বরাগ ও নিবেদন পর্যায়ের ।
১৭। চৈতন্যে পূর্ব যুগের দুজন বিশিষ্ট বৈষ্ণব পদ কর্তার নাম লেখো ?
উত্তর:- বিদ্যাপতি ও চন্ডীদাস
১৮। চৈতন্য পরবর্তী যুগের তিনজন বিশিষ্ঠ পদ কর্তার নাম লেখো ?
উত্তর:- গোবিন্দ দাস , জ্ঞান দাস , বলরাম দাস ।
১৯। চৈতন্যে সমসাময়িক কালের কয়েকজন পদকর্তার নাম লেখো ?
উত্তর:- বাসুদেব ঘোষ , মাধব ঘোষ , গোবিন্দ ঘোষ , নরহরি সরকার , মুরারী গুপ্ত , রায় রামানন্দ , যদু নন্দন , প্রমুখ ।
২০। কয়েক জন মুসলিম বৈষ্ণব পদ কর্তার নাম লেখো ?
উত্তর:- সৈয়দ মুর্তজা , নাসীর মামুদ প্রমুখ ।
২১।" অভিনব জয়দেব " কাকে বলা হয় ?
উত্তর:- কবি বিদ্যাপতি কে ।
২২। " রসমঞ্জরী " গ্রন্থের সংকলক কে ?
উত্তর:- পীতাম্বর দাস ।
২৩। প্রথম চৈতন্যে বিষয়ক বাংলা পদ কে লেখেন
উত্তর:- মুরারী গুপ্ত ।
২৪। সনাতন গোস্বামীর কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখো ?
উত্তর:- হরিভক্তিবিলাস , বৈষ্ণব তোষণী , প্রভৃতি ।
২৫। " হরিভক্তিবিলাস " কার লেখা ?
উত্তর:- গোপাল ভট্টের
২৬। বিষ্ণু উপাসনা বিষয়ক প্রাচীণ গ্রন্থ টির নাম কি ?
উত্তর:- ঋকবেদ সংহিতা ।
২৭। " রাধা " নামের প্রথম উল্লেখ কোথায় আছে ?
উত্তর:- হাল - এর " গাথাসপ্তশতি " গ্রন্থে ।
২৮। গৌরাঙ্গ কে নিয়ে প্রথম বাৎসল্য রসের পদ কে লেখেন ?
উত্তর:- বাসুদেব ঘোষ ।
২৯। বিদ্যাপতি কে " কবি সার্বভৌম " উপাধি কে দেন ?
উত্তর:- রাজা শিব সিংহ ।
৩০। গৌরচন্দ্রিকা প্রথম কোথায় গাওয়া হয়েছিল ?
উত্তর:- খেতুরির মহোৎসব ।
৩১। শ্রী গৌরাঙ্গ কার কাছে কৃষ্ণমন্ত্রে দীক্ষা নেন ?
উত্তর:- ইশ্বরপুরীর কাছে ।
৩২। চৈতন্যদেবের প্রথম শিষ্য কে ?
উত্তর:- তপন মিশ্র ( রঘুনাথ ভট্টের পিতা
৩৩। বিদ্যাপতি কার সভাকবি ছিলেন ?
উত্তর:- রাজা শিব সিংহের ।
৩৪। " গৌরাঙ্গ বিজয় " কার লেখা ?
উত্তর:- চূড়ামনি দাসের ।
৩৫। গোবিন্দ দাস কে " কবিরাজ " উপাধি কে দিয়েছিলেন ?
উত্তর:- শ্রীজীব গোস্বামী ।
৩৬। বিদ্যাপতি কোন গ্রন্থে রাজা কীর্তি সিংহের প্রশস্তি রচনা করেছেন ?
উত্তর:- " কীর্তিলতা " গ্রন্থে
৩৭। বিদ্যাপতি কোন রাজ বংশের পৃষ্টপোষক ছিলেন
উত্তর:- মিথিলার কামেশ্বের বংশের ।
৩৮। গোবিন্দ দাস কার কাছে দীক্ষা নিয়েছিলেন ?
উত্তর:- শ্রীনিবাস আর্চার্যের কাছ ।
৩৯। কোন কোন পর্যায়ের পদ রচনায় গোবিন্দ দাস শ্রেষ্টত্ব অর্জন করেছেন ?
উত্তর:- গৌরচন্দ্রিকা , অভিসার , মান ইত্যাদি ।
৪০। জ্ঞান দাসের জন্ম স্থান কোথায় ?
উত্তর:- বর্ধমান জেলার কাদঁড়া গ্রামে
৪১। জ্ঞান দাস কার কাছে মন্ত্রশিষ্য ছিলেন ?
উত্তর:- জাহ্নবী দেবীর।
৪২। বলরাম দাস কত খ্রি: জন্ম গ্রহণ করেন ?
উত্তর:- ষোড়শ শতকের প্রথার্ধে।
৪৩। বলরাম দাস কার শিষ্য ছিলেন ?
উত্তর:- নিত্যনন্দের ।
৪৪। কোন পর্যায়ের পদ রচনায় বলরাম দাস অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছিলেন ?
উত্তর:- বাৎসল্য রসের পদ রচনায় ।
৪৫। Cosmic Imagination এর কবি কাকে বলা হয় ?
উত্তর:- বিদ্যাপতি কে ।
৪৬। কে প্রথম বিদ্যাপতির পদ সংকলন করেন ?
উত্তর:- জগবন্ধু ভদ্র ।
৪৭। বিদ্যাপতি কোন কোন পর্যায়ের পদ রচনায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন ?
উত্তর:- মিলন , মাথুর , ভাবসম্মিলন , প্রাথনা ইত্যাদি পর্যায়ের পদ রচনায় ।
৪৮। " বুলবুলি " শব্দ টি কে প্রথম ব্যাবহার করেন
উত্তর:- ঈশ্বর গুপ্ত ।
৪৯। কোন ধরনের পদে বিদ্যাপতি আত্মবিশ্লেষণ করেছেন ?
উত্তর:- প্রাথনা বিষয় পদে ।
৫০। বৈষ্ণব মতে রস কয় প্রকার ও কী কী ?
উত্তর:- পাঁচ প্রকার - শান্ত , দাস্য , সখ্য , বাৎসল্য , মধুর
৫১। শৃঙ্গার রস কয় প্রকার ও কী কী ?
উত্তর:- দুই প্রকার - ১) বিপ্রলম্ভ শৃঙ্গার ২) সম্ভোগ শৃঙ্গার ।
৫২। পূর্বরাগ কীভাবে উত্তপন্ন হয় ?
উত্তর:- দর্শন ও শ্রবণের মাধ্যমে ।
৫৩। পূর্বরাগ কয় প্রকার ও কী কী ?
উত্তর:- তিন প্রকার - সাধারনী , সমজ্জসা ও সমর্থ ।
৫৪। বৈষ্ণব পদাবলীর নান্দী পাঠ কোন পর্যায় কে বলা হয় ?
উত্তর:- পূর্বরাগ পর্যায় কে
৫৫। কোন বৈষ্ণব কবি কে " পঞ্চোপাশক " বলা হয় ?
উত্তর:- কবি সার্বভৌম বিদ্যাপতি কে
৫৬। জ্ঞান দাস কোন বংশের সন্তান ?
উত্তর:- ব্রামণ বংশের সন্তান ।
৫৭। বৈষ্ণব দের প্রধান দুটি ধর্ম গ্রন্থের নাম লেখো ?
উত্তর:- বিষ্ণুপুরান ও ভাগবত পুরান ।
৫৮। বজ্রবুলী ভাষায় কে প্রথম পদ রচনা করেন ?
উত্তর:- যশরাজ খান ।
৫৯। বৈষ্ণব পদাবলী তে শ্রেষ্ঠা রস কোনটি ?
উত্তর:- মধুর রস ।
৬০। " গৌরচন্দ্রিকা " শব্দের আভিধানিক অর্থ কি ?
উত্তর:- ভূমিকা
৬১। " বৈষ্ণব " পদাবলীর " পদ " শব্দ টির অর্থ কি ?
উত্তর:- " বৈষ্ণব " পদাবলীর " পদ " শব্দ টির অর্থ হল কবিতা বা সঙ্গীত ।
৬২। " বৈষ্ণব পদাবলীর " প্রথম পদ কর্তা কে ?
উত্তর:- বৈষ্ণব পদাবলীর প্রথম পদ কর্তা হলেন জয়দেব । রাধা ই প্রেম লীলা অবলম্বনে রচিত তার " গীতগোবিন্দম " কাব্য টি আদি বৈষ্ণব পদাবলীর নিদর্শন ।
৬৩। " বৈষ্ণব পদাবলী "র প্রধানত কয়টি ভাষায় লেখা ?
উত্তর:- বাংলা ও বজ্রবুলি ।
৬৪। দুজন মুসলমান বৈষ্ণব কবির নাম লেখো ?
উত্তর:- নাসির মামুদ ও আকবর শাহ্ ।
৬৫। বৈষ্ণব পদাবলী কোন শ্রেণীর কাব্য
উত্তর:- গীতিকাব্য ।
বৈষ্ণব পদাবলী থেকে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রশ্নোত্তর:
১. বৈষ্ণব পদাবলী সাহিত্যে ‘মরমিয়া কবি’ হিসেবে কে বিখ্যাত ছিলেন? তিনি কোন যুগের কবি?
বৈষ্ণব পদাবলী সাহিত্যের ‘মরমিয়া কবি’ হিসেবে খ্যাত ছিলেন কবি চন্ডীদাস।
তিনি আদি মধ্যযুগের তথা প্রাক - চৈতন্য যুগের কবি ছিলেন।
২. কবি চন্ডীদাস কোথায় কত খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেছিলেন?
কবি চন্ডীদাস বীরভূম জেলার অন্তর্গত নান্নুর গ্রামে (মতান্তরে বাঁকুড়া ছাতনা গ্রামে) জন্মগ্রহণ করেন।
কবি চন্ডীদাস এর জন্ম আনুমানিক ১৪১৭ খ্রিস্টাব্দে।
৩. কবি চন্ডীদাসের পদ কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিভাবে ব্যাখ্যা করেছেন?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চণ্ডীদাস কে "দুঃখের কবি" হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি তাঁর প্রেম ভাবনায় লক্ষ করেছেন রসের প্রগাঢ়তা। মিলনেও তাঁর রাধার মধ্যে সুখের অভাব।
৪. চন্ডীদাসের প্রেম ভাবনার অভিনবত্ব কী?
চন্ডীদাসের পদে প্রেমের সার্থকতা ভোগে নয়, ত্যাগে। দেহকে অবলম্বন করে তা দেহাতিক্রমী। তাই চন্ডীদাসের রাধা আত্মবিসর্জনে তাঁর প্রেম সাধনার পূর্ণতা খুঁজে পায়
"পিরিতি লাগিয়া পরাণ ছাড়িলে
পিরিতি মিলায়ে তথা"।
৫. চণ্ডীদাসের পদ রচনার বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে লিখুন।
চন্ডীদাস আটপৌরে সহজ বাংলা ভাষায় তাঁর পদ রচনা করেছেন। তাঁর রচিত পদে প্রবাদ - প্রবচন, উপমা - রূপকের ব্যবহারে লোকায়ত ভাবনার প্রকাশ। অলংকারের জাঁকজমক সেখানে প্রায় নেই বললেই চলে।
৬. বাংলা সাহিত্যে চন্ডীদাস সমস্যা কী?
বাংলা সাহিত্যে ‘চন্ডীদাস’ ভণিতায় একাধিক কবির পদ পাওয়া যায়। যেমন - বড়ু চন্ডীদাস, চন্ডীদাস, দ্বিজ চন্ডীদাস, দীন চণ্ডীদাস প্রমূখ। এর ফলে চন্ডীদাস আসলে ক - জন তা নিয়ে যে সমস্যার সূত্রপাত তা-ই চন্ডীদাস সমস্যা নামে পরিইচত।
৭. "সায়াহ্ন সমীরণের দীর্ঘশ্বাস" - কার পদ সম্পর্কে কে এই মন্তব্য করেছেন?
সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় চন্ডীদাসের পদ সম্পর্কে উদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন।
৮. ব্রজবুলি ভাষা কি?
ব্রজবুলি ব্রজধামের ভাষা নয়। এ হল বাংলা, অসমীয়া, মৈথিলী ও অবহট্ঠ ভাষার সমন্বয়ে তৈরি হওয়া একটি কৃত্রিম ভাষা।
৯. কে, কোথায় নিজেকে ‘খেলন কবি’ হিসেবে বিশেষিত করেছেন?
কবি বিদ্যাপতি "কীর্তিলতা" কাব্যে নিজেকে 'খেলন কবি' হিসেবে বিশেষিত করেছেন।
১০. ভাবসম্মিলন এর পদে বিদ্যাপতির দক্ষতা আলোচনা করুন।
মাথুরের পদে বিদ্যাপতির রাধা যে ভাব গভীরতা তা আরও সংহত হয়েছে ভাব সম্মিলনের পদে। রাধা নিজেকে সাজিয়ে তুলতে চেয়েছেন কৃষ্ণের আগমনের অপেক্ষায়। এবং কল্পনার জগতে কৃষ্ণের সঙ্গে তাঁর নিত্য মিলন। রাধার দেহ পার্থিব প্রেমভাবনা ভাবসম্মিলনের পদের অন্তরময়তায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
১১. প্রার্থনা পর্যায় বিদ্যাপতির অভিনবত্ব কী?
প্রার্থনা পর্যায় রাধা - কৃষ্ণের প্রেম সম্পর্কের বাইরে গিয়ে কবি ব্যক্তিগত ভক্তি ভাবনাকে আশ্রয় করেছেন। প্রাক - চৈতন্য যুগের কবি বিদ্যাপতি এখানে কৃষ্ণের ঐশ্বর্য ভাবের কল্পনা করেছেন এবং কৃষ্ণের চরণতরী কে আশ্রয় করে এই জগৎ থেকে মুক্তি প্রার্থনা করেছেন -
"তুয়া পদপল্লব করি অবলম্বন
তিল এক দেহ দীনবন্ধু"।
১২. কবি বিদ্যাপতি তাঁর সাহিত্য রচনায় কোন কোন রাজার পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেছিলেন?
কবি বিদ্যাপতি তাঁর সাহিত্য রচনায় মিথিলার একাধিক রাজার পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেছিলেন। বিভিন্ন রাজার পৃষ্ঠপোষকতায় রচিত বিদ্যাপতির গ্রন্থ গুলির একটি তালিকা নিম্নে দেওয়া হল ।
১৩. কে, কত সালে "বিদ্যাপতির পদাবলী" প্রকাশ করেন?
সারদাচরণ মিত্র ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে "বিদ্যাপতির পদাবলী" প্রকাশ করেন।
১৪. "মহাজন পদাবলী" কী? কে কবে এটি প্রকাশ করেন?
"মহাজন পদাবলী" বিদ্যাপতি রচিত পদ - সংকলন।
১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে জগবন্ধু ভদ্র "মহাজন পদাবলী"র প্রথম খন্ড প্রকাশ করেন।
১৫. কবি বিদ্যাপতি কে 'অভিনব জয়দেব' বলার কারণ কী?
বিদ্যাপতির পদ সাহিত্যে জয়দেবের পদের ধ্বনি ঝংকার স্পষ্ট শোনা যায়। ভাবের দিক থেকে এই সাদৃশ্য বর্তমান। সেই কারণেই কবি বিদ্যাপতি কে 'অভিনব জয়দেব' বলা হয়।
১৬. কে, কোথায় কবি বিদ্যাপতির প্রতিভাকে 'Cosmic Imagination' বলেছেন?
শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর রচিত "বাংলা সাহিত্যের বিকাশের ধারা" গ্রন্থে বিদ্যাপতির কবি প্রতিভা কে 'Cosmic Imagination' বলে মন্তব্য করেছেন।
১৭. কবি বিদ্যাপতি কে 'কবিসার্বভৌম' বলা হয় কেন?
ভূগোল, ইতিহাস, ন্যায় ও স্মৃতিশাস্ত্র, প্রকৃতি ইত্যাদি নানা বিষয়ে রচনা এবং বৈষ্ণব সাহিত্য রচনায় দক্ষতার জন্য এককথায় নানা শাখায় অদ্বিতীয় প্রতিভার জন্য বিদ্যাপতি কে 'কবি সার্বভৌম' বলা হয।
১৮. বিদ্যাপতি মিথিলার কোন রাজবংশের সভাকবি ছিলেন? তার কোন গ্রন্থে সমকালীন ইতিহাস এর পরিচয় পাওয়া যায়?
কবি বিদ্যাপতি মিথিলার ঔইনীবার বা কামেশ্বর রাজ বংশের সভাকবি ছিলেন।
বিদ্যাপতির "কীর্তিলতা" গ্রন্থে যুদ্ধের ফলে সমাজের তৎকালীন বিপর্যয়ের কথা বর্ণিত হয়েছে।
১৯. বিদ্যাপতির কবিতা কে “দূরগামিনী বেগবতী তরঙ্গসঙ্কুলা নদী” হিসেবে বর্ণনা করেছেন?
সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কবি বিদ্যাপতির পদ সম্পর্কে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করেছেন।
২০. বিদ্যাপতি পরবর্তী বাংলা সাহিত্যে বিদ্যাপতির প্রভাব আলোচনা করুন।
চৈতন্য পরবর্তী যুগের কবি গোবিন্দ দাসের রচনায় বিদ্যাপতির ব্যাপক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। তাই তাঁকে 'দ্বিতীয় বিদ্যাপতি' বলা হয়। সপ্তদশ শতকে 'ছোট বিদ্যাপতি' নামে এক কবির বৈষ্ণব পদ পাওয়া যায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী" তেও বিদ্যাপতির প্রভাব স্পষ্ট লক্ষ্য করা যায়।
২১. বিদ্যাপতির রচনাশৈলীর বৈশিষ্ট্য আলোচনা করুন।
বিদ্যাপতির পদাবলী তে ছিল শব্দ সৃষ্টির নিপুণতা, অলংকারের ঐশ্বর্য এবং ছন্দ ব্যবহারের কুশলতা। উৎপ্রেক্ষা ব্যতিরেক, অতিশয়োক্তি ইত্যাদি অলংকারের অসাধারণ প্রয়োগ রয়েছে বিদ্যাপতির পদে। শব্দ প্রয়োগে ধ্বনিময়তার প্রকাশ ঘটিয়েছেন কবি। আবার শব্দ দিয়ে তৈরি করেছেন চিত্রকল্পও। মণ্ডনকলার অসামান্য নিদর্শন বিদ্যাপতির পদ।
২২. নৈমিষা অরণ্যে থাকাকালীন বিদ্যাপতি কোন গ্রন্থ রচনা করেন?
নৈমিষা অরণ্যে থাকার সময়ে মিথিলা থেকে নৈমিষা অরণ্য পর্যন্ত ভূভাগের বিবরণ দিয়ে বিদ্যাপতি "ভূপরিক্রমা" নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন।
২৩. 'বিদ্যাপতি বাঙালি কবি নন' - কে, কত সালে প্রথম তা প্রমাণ করেন?
রাজকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে প্রথম প্রমাণ করেন যে, বিদ্যাপতি বাঙালি কবি নন।
২৪. "আমরা বাঙালির ধুতি চাদর পরাইয়া মিথিলার বড় পাগড়ী খুলিয়া ফেলিয়া তাঁহাকে আমাদের করিয়া লইয়াছি" - কে, কার সম্পর্কে কোথায় এই মন্তব্য করেছেন?
দীনেশচন্দ্র সেন তাঁর "বঙ্গভাষা ও সাহিত্য" গ্রন্থে বিদ্যাপতি সম্পর্কে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করেছেন।
২৫. কোন কোন বৈষ্ণব পদ সংকলনে বিদ্যাপতির পদ স্থান পেয়েছে?
"ক্ষণদাগীতচিন্তামণি", "পদামৃতসমুদ্র", "পদকল্পতরু" ইত্যাদি বৈষ্ণবীয় পদসংকলনে বিদ্যাপতির অজস্র পদ স্থান পেয়েছে।
২৬. চৈতন্যদেব যে বিদ্যাপতির পদের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন তা কীভাবে জানা যায়?
কৃষ্ণদাস কবিরাজ তাঁর "চৈতন্যচরিতামৃত" গ্রন্থে লিখেছেন -
“চন্ডীদাস বিদ্যাপতি রায়ের নাটকগীতি
কর্ণামৃত শ্রীগীতগোবিন্দ।
স্বরূপ রামানন্দ সনে মহাপ্রভু রাত্রিদিনে
গান শুনে পরমানন্দ”।।
এ থেকেই বোঝা যায় শ্রীচৈতন্যদেব বিদ্যাপতির পদের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন।
২৭. চন্ডীদাসের সঙ্গে বিদ্যাপতির পার্থক্য নিরূপণ করুন।
চন্ডীদাস পাণ্ডিত্য বর্জিত, সহজ-সরল গ্রাম্য ভাষায় রাধা - কৃষ্ণ বিষয়ক পদ লিখেছেন। অন্যদিকে বিদ্যাপতি রাজসভার কবি হওয়ায় তাঁর রচনায় বাকবৈচিত্র ও মন্ডলকলার বৈচিত্র বর্তমান। রবীন্দ্রনাথের মতে - "বিদ্যাপতি সুখের কবি, চন্ডীদাস দুঃখের কবি"। চন্ডীদাস গভীর এবং ব্যাকুল বিদ্যাপতি নবীন এবং মধুর।
Comments
Post a Comment
If you have any doubts, let me know or write us Kajemshaikh0365@gmail.com