[
] আত্মার অবস্থা কয়টি ও কি কি? ইহা সংক্ষেপে আলোচনা করো।
[
] আত্মার অবস্থা :
বাদরায়ণের মতে জীবের স্বপ্ন, সুষুপ্তি, জাগৃতি, মূর্চ্ছা প্রভৃতি হলো আত্মার ভিন্ন ভিন্ন অবস্থা। এক্ষেত্রেও তিনি বিভিন্ন শ্রুতিবাক্যকেই প্রামাণ্য স্বীকার করে সিদ্ধান্ত করেছেন।
(১) স্বপ্নাবস্থা :
1)সুপ্তিতে স্বপ্নদৃষ্ট বস্তু মায়ামাত্র। তবে স্বপ্নে যে বস্তু দৃষ্ট হয়, স্বপ্নদ্রষ্টা জীবই এই স্বগ্নজগতের সৃষ্টিকার্যের কর্তা। অর্থাৎ স্বপ্নাবস্থা হলো আত্মারই এক ভিন্ন অবস্থা। যেমন, বৃহদারণ্যক উপনিষদের শ্রুতিতে বলা হয়েছে-
সেই পুরুষ অর্থাৎ জীবাত্মার স্থান হলো দুটি- ইহলোক আর পরলোক। এই দুটি জগতের সন্ধি হয়েছে স্বপ্নস্থানে। এটি তৃতীয় স্থান। এই স্থানে অবস্থান করেই জীবাত্মা ইহলোক এবং পরলোক- এই দুটি জগৎকেই দেখেন। মানুষ যা আশ্রয় করে অর্থাৎ যে সাধনাকে অবলম্বন করে পরলোকে যায়, জীবাত্মাও তাকে অবলম্বন করেই পাপ (দুঃখ) এবং আনন্দ- এই দুটিকেই দেখেন। আবার যখন প্রসুপ্ত হন, তখন জীবাত্মার জন্ম-গ্রহণ; শরীর ধারণ থেকে শুরু করে ইহজগতের যতগুলি উপাদান সবগুলি আত্মসাৎ করে, তাকে ভেঙে-গুঁড়িয়ে আবার নতুনভাবে তৈরি করে এক অভিনব স্বপ্নরাজ্য গড়ে তোলেন- আপনার জ্যোতি দিয়ে নিজের মতো করে। এই অবস্থায় পুরুষ হন স্বয়ংজ্যোতি ।
2)দুস্তর পথ পাড়ি দেবার রথ নেই, রথ টানার অশ্ব নেই, এই আত্মাই আপন ইচ্ছায় নির্মাণ করে নেন রথ, অশ্ব। যেখানে আমোদ নেই, প্রমোদ নেই, হর্ষ নেই, আনন্দ নেইইে স্বয়ংজ্যোতি আত্মা আপন লীলাবিলাসে সেখানে সে-সবও সৃজন করে নেন। যেখানে নেই জলাশয় বা ডোবা, নেই পুকুর, ইনিই সেখানে তা তৈরি করে নেন আপন ইচ্ছায়। তিনিই কর্তা। তাঁর যা কিছু প্রয়োজন স্বয়ংজ্যোতি আত্মা ইচ্ছাশক্তি দিয়ে তা সবই পূরণ করে নেন ।
3)এই শ্রুতিবচনই প্রমাণ করে যে, জীবই স্বপ্ন-জগতের সৃষ্টি-কার্য করে- পরমেশ্বর নন। এবং তারই অনুসরণে সূত্রকার বাদরায়ণ বলেন-
শ্রুতিতে স্বপ্নাবস্থায় যে রথ প্রভৃতি সৃষ্টির উল্লেখ আছে, স্বপ্নদ্রষ্টা জীবই তার কর্তা, কারণ শ্রুতিতে অনুরূপ বাক্য আছে । কিন্তু স্বপ্নে যে রথ ইত্যাদি কাম্যবস্তু সৃষ্ট হয়, তা মায়ামাত্র- কারণ তাতে জাগ্রত অবস্থার সকল লক্ষণ থাকে না ।
4)স্বপ্নে সৃষ্টবস্তু মায়া হলেও স্বপ্নকে ব্রহ্মের সংকল্প হিসেবেই মনে করা হয়। তাই ভালোমন্দ নানা ঘটনার পূর্বসূচনা স্বপ্নেই হয়ে থাকে বলে শ্রুতিতেও স্বীকার করা হয়। যেমন, ছান্দোগ্য উপনিষদে একটি শ্রুতি আছে-
কাম্যকর্মের অনুষ্ঠানকালে যদি স্বপ্নে স্ত্রীলোক দর্শন হয়, তবে জানবে কর্মে তোমার সিদ্ধিলাভ নিশ্চিত। এটিই হলো স্বপ্ন-নিদর্শনে; স্বপ্ন নিদর্শনে ।
(২) জাগ্রৎ অবস্থা :
1)জাগ্রৎ অবস্থা হলো জীবাত্মার বোধির জগত। আর স্বপ্নাবস্থা হলো স্বসৃষ্ট মায়ার জগৎ। কেননা, জাগ্রৎ অবস্থায় মানুষ যা দেখে, যা অনুভব করে, স্বপ্নে তারই পুনরাবৃত্তি ঘটে। তবে পার্থক্য হলো জীব তখন থাকে ‘অবিদ্যা’ বা মায়া-কবলিত। তাই স্বপ্ন ও জাগ্রৎ অবস্থা প্রসঙ্গে শ্রুতির ঋষিরা বলেন- এটি জীবের অবস্থান্তর। যেমন, বৃহদারণ্যক উপনিষদের শ্রুতিতে বলা হয়েছে-
সেই পুরুষ স্বেচ্ছাবিহার, স্বপ্নানন্দ উপভোগের পর, যে পথ ধরে গিয়েছিলেন নিদ্রাজগতে, সেই পথ ধরেই আবার ফিরে আসেন বোধের জগতে বা জাগ্রৎ অবস্থায়। স্বপ্নে তিনি যা কিছুই দেখুন না কেন, তাতে তার কোন আসক্তি থাকে না। তিনি নির্লিপ্ত, অসঙ্গ- স্বয়ংজ্যোতি… । বোধির জগতে অর্থাৎ জাগ্রৎ অবস্থায় এই দৃশ্যমান জগতে বিহার করে, পাপ-পুণ্য দেখে স্বপ্ন দেখার জন্য আবার সেই পুরুষ একই পথ ধরে স্বপ্নস্থানে ফিরে যান । নদীর জলে এক মহামৎস্য অর্থাৎ বিশালাকায় মাছ যেমন এপাড় থেকে ওপাড়ে আবার এপাড়ে বিচরণ করে, এই পুরুষও ঠিক সেভাবেই বিহার করেন স্বপ্ন থেকে জাগরিত স্থানে- স্বপ্ন আর জাগরণের মাঝে।
2)স্বপ্নে বাহ্যবস্তু থাকে না, তবুও স্বপ্নে যা দেখা যায় তা যে মিথ্যা তা স্বপ্নাবস্থায় বুঝা যায় না। কিন্তু কিভাবে বুঝা যায় যে স্বপ্নাবস্থা ছিলো অবিদ্যায় মায়া কবলিত ?
কারণ স্বপ্নে যা দেখা যায়, তা জাগ্রৎ হয়ে জাগ্রৎ অবস্থার অভিজ্ঞতার দ্বারা বাধিত হয়- দেখা যায় তা মিথ্যা ছিলো। অর্থাৎ স্বপ্নাবস্থা একপ্রকার স্মৃতি, আর জাগ্রত অবস্থা হলো বাস্তব অনুভব। সুতরাং তাকে মিথ্যা বলে অগ্রাহ্য করা যায় না। ফলে দুই অবস্থার অভিজ্ঞা একরূপ নয়। তাই বাদরায়ণ বলেন-
জাগ্রৎ ও স্বপ্নাবস্থার চেতনার মধ্যে পার্থক্য আছে বলে, জাগ্রৎ অবস্থার অভিজ্ঞা স্বপ্নাবস্থার অভিজ্ঞার।
(৩) সুষুপ্তি :
1)এই স্বপ্নাবস্থা ও জাগৃতি ছাড়াও জীবাত্মার আরেকটি অবস্থা হলো সুষুপ্তি। এটা কী ?
শাস্ত্রে আছে, সুপ্তি বা নিদ্রা দু’রকমের হয়। একটিতে মানুষ স্বপ্ন দেখে, অন্যটিতে দেখে না। স্বপ্নহীন এই নিদ্রাকেই ‘সুষুপ্তি’ বলে। এই সুষুপ্তির লক্ষণ ব্যাখ্যাকল্পে ছান্দোগ্য উপনিষদের শ্রুতিতে বলা হয়েছে-
কোন মানুষ যখন গভীর নিদ্রায় মগ্ন হয় তখন তার সমস্ত ইন্দ্রিয় শান্ত হয়ে যায়, তারা কোন কাজ করে না। সেই ব্যক্তির আর কোন দুঃশ্চিন্তা, দুর্ভাবনা থাকে না। তখন সে স্বপ্নও দেখে না। ইন্দ্রিয়গুলি তখন তার নাড়ীতে প্রবেশ করে। তখন সূর্যরশ্মি তাকে ঘিরে থাকায় কোন পাপই তাকে স্পর্শ করতে পারে না।
2) বৃহদারণ্যকে জীবাত্মার পূর্বোল্লিখিত জাগৃতি ও স্বপ্নাবস্থার পরপরই সুষুপ্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে-
আকাশপথে উড়তে-উড়তে, বিহারে-বিহারে শ্রান্ত শ্যেন বা বিচিত্রপক্ষ পাখি এক সময় ডানা গুটিয়ে যায় নিজের নীড়ের দিকে, তেমনি এই পুরুষও বিশ্রামের আশায় ছুটে চলে সুষুপ্তির দিকে। সেখানে কোন কামনা নেই, কোন স্বপ্নও নেই। আত্মার এই রূপটি হলো অতিচ্ছন্দা অর্থাৎ কামনারহিত, যাবতীয় পাপরহিত; এটি হলো অন্তরঙ্গ অভয় রূপ। প্রেমিক-প্রেমিকার যখন নিবিড় আলিঙ্গন হয়, তখন যেমন তার স্থান-কালের জ্ঞান থাকে না, দেখেও দেখে না সেখানে আছে ঘরের মানুষ কি বাইরের মানুষ, পরমাত্মার সঙ্গে মিলনে শারীর-পুরুষেরও তখন সেই অবস্থা। তখন সে বাহ্যজ্ঞান রহিত। এটি হলো আত্মার আপ্তকাম, আত্মকাম, কামনাহীন, শোকাতীত রূপ।
3) যে সুপ্তিতে জীবের বাহ্যজ্ঞান রহিত স্বপ্নহীন সুষুপ্তি অবস্থা, প্রশ্ন আসতে পারে, তখন জীবাত্মার অবস্থান কোথায় থাকে ?
শ্রুতিতে বলা হচ্ছে- ‘সুষুপ্তিকালে তিনি সতের সাথে একীভূত হন এবং নিজ স্বরূপে গমন করেন’। পরমাত্মার সাথে জীবাত্মার এই একীভূত অবস্থার সাথে তাহলে দেহত্যাগী মুক্ত আত্মার ভিন্নতা কোথায় ?
এই সংশয় দূর করতেই সূত্রকার বাদরায়ণ বলেন-
সুষুপ্তি অবস্থায় জীবাত্মা নাড়ী, পুরীতৎ এবং ব্রহ্ম এই তিনটি পৃথক বস্তুর সাথেই মিলিত হয়ে থাকে। তা শ্রুতি থেকে জানা যায়।
4)জেগে থাকার সময় সমস্ত ইন্দ্রিয় দিয়ে ঐ বিজ্ঞানময় পুরুষ যেসব বিষয় উপভোগ করে, ঘুমোতে যাবার সময় স্বপ্নের মধ্যে সে যার আস্বাদ নেয়, সুষুপ্তির মধ্যে কোন বিষয়ই সে উপভোগ করে না। ঘুমের অতল সাগরে সে তখন তলিয়ে থাকে। কোন তরঙ্গই সে সময় তাকে স্পর্শ করে না। -রাজা বললেন, ব্রহ্মন্ এই সময় সেই পুরুষ কোথায় থাকে জানো ?
মানুষের হৃদপিণ্ড থেকে বাহাত্তর হাজার নাড়ী বেরিয়ে সারা শরীরকে হৃদয়ের সঙ্গে বেঁধে রেখেছে। প্রতিটি নাড়ীই হিতকর। তাই এই নাড়ীগুলিকে বলে ‘হিতা’ নাড়ী। সুষুপ্তিকালে সেই বিজ্ঞানময় পুরুষ এই নাড়ীগুলির সঙ্গে হৃদয়ে শুয়ে থাকে। তখন কারো কোন বোধশক্তিই তাকে সেখানে বিব্রত করতে পারে না। সুখ-দুঃখ, অভাব-অনটন কোন কিছুই সে সময় সে বোধ করে না। মহারাজ, মহাব্রাহ্মণের মহা আনন্দ তখন তার মধ্যে। সেই আনন্দ তার কিসের ?
পরমাত্মার মধ্যে নিশ্চিন্তে থাকতে পারার আনন্দ।
5)সুষুপ্তিতে জীবাত্মা যেভাবে ব্রহ্মে লীন হয়, সুষুপ্তি অবস্থা থেকে যখন জাগ্রৎ অবস্থায় ফিরে আসে তখন সে সৎ বা ব্রহ্ম থেকেই ফিরে আসে। সুষুপ্তি থেকে জীবাত্মার জাগ্রৎ অবস্থায় ফিরে আসা বিষয়ে যাজ্ঞবল্ক্যের মতোই কৌষীতকি উপনিষদের শ্রুতিতেও বলা হয়েছে-
ঘুমন্ত মানুষ যখন কোন স্বপ্নই দেখে না, সুষুপ্তিতে মগ্ন, তখন সে এইসব হিতা নাড়ীর মধ্যে থেকে প্রাণের (ব্রহ্মের) সঙ্গে এক হয়ে যায়। জীবাত্মা তখন প্রাণের (ব্রহ্মের) মাঝে বিলীন। তখন তার যতো ইন্দ্রিয় আর ইন্দ্রিয়ের বিষয় আছে যেমন বাক্-ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে নাম, চক্ষু-ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে রূপ, কর্ণ-ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে শব্দ, মন-ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে চিন্তা- সব, সব তারই মাঝে বিলীন হয়ে যায়। যখন ঘুম ভাঙে, জেগে ওঠে, তখন জ্বলন্ত আগুন থেকে যেমন স্ফুলিঙ্গ চারদিকে ছিটকে যায়, সেইভাবে ঐ মহাপ্রাণ আত্মা থেকে জীবাত্মার প্রাণশক্তি অর্থাৎ ইন্দ্রিয়শক্তিগুলো ছিটকে বেরিয়ে এসে যে যার বিষয়ের দিকে ছুটে যায়। প্রাণসমূহ থেকে দেবতারা অর্থাৎ ইন্দ্রিয় দেবতারা আর ঐ দেবতাদের থেকে লোকালোকের প্রকাশ।
6)তবুও প্রশ্ন উঠে, সৎ হতে বা ব্রহ্ম হতে এসেও বা জাগরিত হয়েও জীব কেন জানতে পারে না যে সে ব্রহ্ম থেকেই এসেছে ?
কিংবা তার স্মৃতিতেই বা কেন তা থাকে না ?
এ বিষয়ে শ্রুতিতেও উক্ত হয়েছে যে-
এই পূর্ববাহিনী নদীসমূহ পূর্বদিকে প্রবাহিত হয় এবং পশ্চিমবাহিনী নদীসমূহ পশ্চিমদিকে প্রবাহিত হয়। সমুদ্র থেকে উৎপন্ন হয়ে তারা আবার সমুদ্রেই লীন হয় এবং সমুদ্রই হয়ে যায়। ঠিক যেমন এই সব নদী সমুদ্রে মিশে গিয়ে ‘আমি অমুক নদী, আমি অমুক নদী’ এরূপ পৃথক অস্তিত্ব আর জানতে পারে না। একইভাবে হে সোম্য, এইসব জীব সৎ থেকে আসে, কিন্তু তা তারা জানে না। তারা কখনো ভাবে না, ‘আমরা সৎ থেকে এসেছি।’ পূর্বজন্মে পৃথিবীতে তারা বাঘ, সিংহ, চিতাবাঘ, শূয়োর, কীট-পতঙ্গ, মাছি বা মশা ইত্যাদি যে রূপেই থাকুক না কেন, তাদের প্রত্যেককেই আবার ফিরে আসতে হয়।
7) জীবের বাহ্যজ্ঞানলুপ্ত সুষুপ্তিকালে ব্রহ্মের সাথে মিলিত বা আত্মার স্বরূপে ফিরে যাওয়ার সাথে দেহত্যাগী মুক্ত আত্মার ব্রহ্মে লীন হওয়ার মধ্যে যেহেতু পার্থক্য থাকে না, তাই সুষুপ্তির পর জাগৃতি অবস্থায় ফিরে আসার ক্ষেত্রেও একই জীব যে সুষুপ্তি হতে প্রত্যাবৃত্ত হয়, তার নিশ্চয়তা কোথায় ?
কেননা জীব পুনর্জন্ম নিয়ে পুর্বজন্মের কোন স্মৃতি যেমন মনে করতে পারে না, তেমনি সুষুপ্তিকালীন কোন বিষয়ও জীবের স্মৃতিতে থাকে না। তাই এমন কোন নিশ্চিত নিয়ম থাকতে পারে না যে, একই জীব ব্রহ্ম থেকে ফিরে আসে। এই আপত্তি নিষ্পত্তিকল্পেই সূত্রকার বাদরায়ণ বলেন, যেহেতু জীব মায়াদ্বারা আচ্ছন্ন থাকে, সেজন্য সুষুপ্তিকালে জীব ব্রহ্মের সাথে নিজের একত্বকে অনুভব করতে পারে না। এবং এ প্রসঙ্গে বেদান্তসূত্রের সিদ্ধান্ত হলো-
সুষুপ্ত জীবই পুনরায় জাগ্রত হয়। তা তার কর্ম, স্মৃতি, শাস্ত্রীয় প্রমাণ এবং নৈতিক শিক্ষা থেকে জানা যায় ।
এই সূত্রটি বলতে চায় যে, একই জীব সুষুপ্তির পর ব্রহ্ম হতে প্রত্যাগমন করে যেসব কারণে-
(১) কোন ব্যক্তি নিদ্রার পূর্বে কোন অসমাপ্ত কাজকে নিদ্রা ভঙ্গের পর পুনরায় সম্পন্ন করে থাকে- তা আমরা দেখতে পাই। যদি সে একই জীব না হতো তা হলে অন্য জীবের কৃত অর্ধসমাপ্ত কাজকে সম্পন্ন করার জন্য তার কোন আগ্রহ থাকতো না।
(২) নিদ্রার পূর্বে এবং পরে কোন ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে আমাদের একত্বের অভিজ্ঞতা।
(৩) আমাদের পূর্ববর্তী ঘটনার স্মৃতি।
(৪) শ্রুতি প্রমাণ; যেমন এই শ্রুতিটি-জীবগণ নিদ্রার পূর্বে এই পৃথিবীতে যে যা ছিলো- বাঘ, সিংহ, নেকড়ে, শূয়োর, কীট-পতঙ্গ, মশা, মাছি ইত্যাদি নিদ্রার পরেতারা সেভাবেই ফিরে আসে। তারা কিন্তু জানে না তারা সৎ থেকে এসেছে।
(৫) যদি সুষুপ্তির পথে গতিশীল ব্যক্তিটি ব্যুত্থিত ব্যক্তিটি থেকে পৃথক হতো, তাহলে কর্ম বা জ্ঞান সম্পর্কে শাস্ত্রীয় উপদেশগুলি নিরর্থক হয়ে যেতো। কারণ, যদি কোন ব্যক্তি নিদ্রিত হওয়া মাত্র ব্রহ্মের সাথে চিরন্তনভাবে একীভূত হয়ে যেতে পারতো, তাহলে মুক্তিলাভের জন্য শাস্ত্রীয় উপদেশের কোন মূল্যই থাকতো না।
(৪) মূর্চ্ছা :
জীবের অন্য আরেকটি অবস্থা রয়েছে, তা হলো মূর্চ্ছা। বাদরায়ণের মতে, মূর্চ্ছা হলো অর্ধ-মরণ। শরীরে অবস্থান কালে জীবের তিনটি মাত্র অবস্থা থাকে- জাগ্রৎ, স্বপ্ন এবং সুষুপ্তি। আর চতুর্থ অবস্থাটি হলো মৃত্যু। কিন্তু মূর্চ্ছা অবস্থাকে জীবের পঞ্চম অবস্থারূপে গণ্য করা যায় না- যেহেতু এরূপ কোন অবস্থার কথা আমাদের জানা নেই। তাহলে মূর্চ্ছা অবস্থার স্বরূপটি কী ?
তা কি জীবের একটি পৃথক অবস্থা, অথবা এই তিন অবস্থারই অন্যতম অবস্থা ?
তা জাগ্রৎ বা স্বপ্ন অবস্থা হতে পারে না, কারণ তাতে কোন চেতনা বা কোন কিছুর অনুভূতি থাকে না। তা সুষুপ্তিও নয়, কারণ সুষুপ্তি আনন্দ দেয়, মূর্চ্ছা আনন্দ দেয় না। তা মৃত্যুও নয়, কারণ জীব মূর্চ্ছার পর আবার প্রাণময় হয়ে ওঠে। সুতরাং একমাত্র বিকল্প অবশিষ্ট থাকে এই যে, মূর্চ্ছাবস্থায় জীব আংশিকভাবে সুষুপ্তির অবস্থাই প্রাপ্ত হয়। এর কারণ হলো, সে অবস্থায় জীবের কোন সংজ্ঞা থাকে না এবং পরবর্তীকালে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। এ অবস্থাটি আংশিকভাবে মৃত অবস্থাও বটে, কারণ সে অবস্থায় জীব দুঃখ এবং বেদনা অনুভব করে যার প্রতিক্রিয়া তার বিকৃত মুখে এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে প্রকট হয়ে থাকে। ফলে এ অবস্থাটি একটি পৃথক অবস্থাই বটে, যদিও তা সাময়িকভাবে ঘটে। কিন্তু তা যে একটি পঞ্চম অবস্থা নয় তার কারণ হলো, মূর্চ্ছাবস্থা অপর দুটি অবস্থারই সংমিশ্রণ বিশেষ।
উপভাষা কাকে বলে? কয় প্রকার ও কি কি?? তাদের সীমানা নির্ধারণ কর।
ভাষা কাকে বলে? ভাষার বৈশিষ্ট্য ও অংশ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য 1st semester 1 ও 2 paper suggetion
পারিভাষিক শব্দ কি বা কাকে বলে | পারিভাষিক শব্দের প্রয়োজনীয়তা ও পরিভাষা তালিকা
ধ্বনি পরিবর্তনের রীতি | dhoni poribortoner riti mcq|primary TET
ভারতীয় ভাষা পরিষদ l Bhartiya -arya Bhasha
জীবনস্মৃতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । rabindra nath tagor jibon sriti
বরেন্দ্রী উপভাষার অঞ্চল বা এলাকা উল্লেখ করে এই উপভাষার রূপতাত্ত্বিক ও ধ্বনিতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য লেখ।
সামাজিক গোষ্ঠীর সংজ্ঞা , বৈশিষ্ট ও গুরুত্ব
প্রাথমিক গোষ্ঠী ও গৌণ গোষ্ঠীর পার্থক্য গুলো আলোচনা কর।
সামাজিকীকরণ কি l samajikikoron ki সামাজিকীকরণ কি l samajikikoron ki l সামাজিকীকরণে পরিবারের ভূমিকা
prathomik ghostir songa o boisisto in bengali l প্রাথমিক গোষ্ঠীর ধারণা , বৈশিষ্ট ও গুরুত্ব।
B.A. (Hons.) Bengali, Bachelor of Arts Honours in Bengali, Syllabu…
WB TET Preparation Tips 2023, Study Material
Philosophy Short Essay Questions | My Best Writer
Videosহাট্টিমাটিম টিম - Hattimatim Tim and more | Bengali Rhymes Collection -1
করোনা l coronavirus l সময়ে বিদ্যালয়ের অবস্থা । পার্ট-1
করোনা l coronavirus l সময়ে বিদ্যালয়ের অবস্থা । পার্ট -2
Comments
Post a Comment
If you have any doubts, let me know or write us Kajemshaikh0365@gmail.com