शुक्रवार, 30 दिसंबर 2022

ভারতীয় আর্য ভাষার তিনটি স্তর আলোচনা করো | একাদশ শ্রেণি | বাংলা |


 

1) ভারতীয় আর্যভাষা কাকে বলে?    ভারতীয় আর্য ভাষার তিনটি  স্তর কি কি আলোচনা করো |

 

ভারতীয় আর্যভাষামূল ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাভাষীর আর্য জাতির যে শাখাটি ভারতবর্ষে প্রবেশ করে, তাকেই আমরা  বলি। 

ভারতীয় আর্য ভাষার তিনটি স্তর 

ইন্দো ইউরোপীয় ভাষা বংশের 9 টি ভাষা গোষ্ঠীর একটি হল ইন্দো-ইরানীয়। ইন্দো-ইরানীয় গোষ্ঠী দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে একটি ইরান-পারস্যে অন্যটি ভারতবর্ষে প্রবেশ করে। ভারতে আগত এই জনগোষ্ঠীর ভাষাই ভারতীয় আর্য ভাষা নামে পরিচিত। ভারতীয় আর্য ভাষার বিবর্তনকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়-

 BUY BOOK- Bangla Sahityer Sampurna Itibrtta

. প্রাচীন ভারতীয় আর্য (OIA)-

          • আনুমানিক সময়সীমা: 1500- 600 খ্রিস্টপূর্বাব্দ।

          • নিদর্শন : ঋগ্বেদসংহিতাঅন্যান্য বেদ সংস্কৃত সাহিত্য।

 

. মধ্য ভারতীয় আর্য (MIA)-

          • আনুমানিক সময়সীমা: 600 খ্রিস্টপূর্বাব্দ- 900 খ্রিস্টাব্দ।

          • নিদর্শন: জৈন বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থঅশোকের শিলালিপি।

 

. নব্য ভারতীয় আর্য (NIA)-

          • আনুমানিক সময়সীমা: 900 খ্রিস্টাব্দ- বর্তমান কাল।

          • নিদর্শন: আধুনিক ভারতীয় সাহিত্য।

 

      ∆∆    ভারতীয় আর্য ভাষার প্রথম স্তর হল প্রাচীন ভারতীয় আর্য। আনুমানিক 1500- 600 খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত এর ব্যাপ্তিকাল। এই সময়কালের মধ্যে দুটি ভাষার অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়।

 BUY BOOK- Bangla Sahityer Sampurna Itibrtta

a. বৈদিক ভাষা- যার সাহিত্যিক নিদর্শন ঋকবেদ সহ অন্যান্য বেদ।

b. বৈদিক ভাষার বিকৃতি প্রতিরোধ করে পাণিনির "অষ্টাধ্যায়ী" ব্যাকরণের দ্বারা সংস্কার করা "সংস্কৃত ভাষা", "কালিদাস", "ভবভূতি" প্রমুখের রচনায় যার নিদর্শন মেলে। তবে সাহিত্যিক রূপের পাশাপাশি সংস্কৃতের একটি কথ্যরূপও প্রচলিত ছিল।

 

          ∆∆   ভারতীয় আর্য ভাষার দ্বিতীয় স্তর হলো মধ্য ভারতীয় আর্য। আনুমানিক 600 খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে শুরু করে 900 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে এই স্তরটি বিস্তৃত ছিল। কথ্য সংস্কৃত থেকেই বিবর্তনের ফলে মধ্য ভারতীয় আর্যের জন্ম। মধ্য ভারতীয় আর্যের আবার তিনটি স্তর বর্তমান। এর প্রথম স্তর "পালি"- যার সময়সীমা 600 থেকে 200 খ্রিস্টপূর্বাব্দ। পালি ভাষার নিদর্শন পাওয়া যায় বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ "ত্রিপিটক"- এ। মধ্য ভারতীয় আর্যের দ্বিতীয় স্তর প্রাকৃত। সংস্কৃতের মূল উপাদান থেকে আগত লোকসাধারণ বা প্রাকৃতজনের মুখের ভাষাই হলো প্রাকৃত। এর সময়সীমা 200 খ্রিষ্টপূর্ব থেকে 600 খ্রীস্টাব্দ। অঞ্চল ভেদে এর পাঁচটি রূপ ছিল-মাগধী প্রাকৃতঅর্ধমাগধী প্রাকৃতশৌরসেনী প্রাকৃতমহারাষ্ট্রী প্রাকৃত এবং পৈশাচী প্রাকৃত।

 

         ∆∆   ভারতীয় আর্য ভাষার তৃতীয় স্তর হলো নব্য ভারতীয় আর্য। 900 খ্রীষ্টাব্দ থেকে বিভিন্ন অপভ্রংশ ভাষা থেকে ভারতের অঞ্চল বিশেষে যে সমস্ত ভাষা সৃষ্টি হয়ে আজও প্রচলিত সেই সমস্ত ভাষাকেই নব্য ভারতীয় আর্য ভাষা বলা হয়। নব্যভারতীয় আর্যভাষা গুলির মধ্যে মহারাষ্ট্র অপভ্রংশ থেকে মারাঠীকোঙ্কনী ভাষাশৌরসেনী অপভ্রংশ থেকে নেপালিকুমায়ুনী এবং গাড়োয়ালিপৈশাচী অপভ্রংশ থেকে সিন্ধি এবং পাঞ্জাবিঅর্ধমাগধী অপভ্রংশ থেকে অবধীবাঘেলিছত্তিশগড়ী এবং মাগধী অপভ্রংশ থেকে মৈথিলী, মগহী, ভোজপুরী, ওড়িয়া, অসমীয়া এবং আমাদের মাতৃভাষা বাংলা ভাষার জন্ম হয়েছে। কালক্রমে এসব ভাষার আবার উপভাষা সৃষ্টি হয়েছে।

 

 BUY BOOK- Bangla Sahityer Sampurna Itibrtta

2) প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা বলতে কী বোঝ ? এর ধ্বনিতাত্ত্বিক রূপতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট আলোচনা করো

 

উত্তর : পণ্ডিতদের অনুমান আর্যরা ভারতে এসে তাদের দৈনন্দিন জীবনে সাহিত্য সৃষ্টিতে যে ভাষা ব্যবহার করেছিল তার নাম ভারতীয় আর্য ভাষা। মুখের ভাষা কালের সঙ্গে বদলে যায়, এই হিসাবে আর্যভাষা তিনটি স্তরে বিবর্তিত হয়েছে

 

() আদিস্তর বা প্রাচীন ভারতীয় আর্য।

() মধ্যস্তর বা মধ্য ভারতীয় আর্য।

() অভ্যস্তর বা নব্য ভারতীয় আর্য।

 

পণ্ডিতদের মতানুযায়ী ১৫০০ খ্রীঃ পূর্বাব্দ থেকে ৬০০ খ্রীঃ পূর্বাব্দ পর্যও সময়ে ব্যবহৃত আর্যদের ভাষাই হল প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা। এই ভাষার নিদর্শন হল বেদ। তবে চারটি বেদের মধ্যে একমাত্র ঋকবেদে প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার সর্বাধিক নিদর্শন মেলে) ভাষাতাত্ত্বিকেরা প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার ভাষাতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যর সন্ধান করেছেন। থেকে ভাষাটির স্বরূপ স্পষ্ট হয়।

 

প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার ধ্বনিতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য:

() প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষায় , , , , , প্রভৃতি স্বরধ্বনিগুলি বর্তমান ছিল।

() এই সময়ের ভাষায় , , প্রভৃতি ব্যঞ্জনধ্বনিগুলি বর্তমান ছিল।

() প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষায় শব্দের আদি স্থান ছাড়া অন্যত্র বিবিধ যুক্তব্যঞ্জনের প্রচুর ব্যবহার ছিল। যেমনক্ত, , ক্ষ্ম, দ্ম, ম্ম, জ্ঞ প্রভৃতি।

() প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষায় যত্র তত্র সন্ধি লেগেই ছিল।

() প্রাচীন ভারতীয় আর্য বর্ণমালার প্রতিটি বর্গে একটি করে অনুনাসিক ধ্বনি আছে। যেমন বর্গে , বর্গে , বর্গে , বর্গে , বর্গে ম। প্রতিটি ধ্বনিরই বিশিষ্ট উচ্চারণ পার্থক্য ছিল।

 

প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার রূপতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য:

() প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষায় ক্রিয়ার কাল পাঁচটি

বর্তমান লট্

ভবিষ্যত লট্‌

অতীতলঙ, লুঙ, লিট্।

() প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষায় বচন ছিল তিনটি একবচন, দ্বিবচন, বহুবচন।

() সচীন ভারতীয় আর্য ভাষায় পুরুষ ছিল তিনটি প্রথম পুরুষ। উত্তম পুরুষ, মধ্যম পুরুষ,

() প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষায় লিঙ্গ ছিল তিনটি - পুংলিঙ্গ, স্ত্রীলিঙ্গ, ক্লীবলিঙ্গ।

() প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষায় কারক ছিল আটটিকর্তৃ, কর্ম, করণ, সম্প্রদান, অপাদান, অধিকরন, সম্বন্ধ পদ, সম্বোধন পদ।

 () প্রাচীন ভারতীয় আর্য বৈদিকে একাধিক পদে সমাস হত না। পাশাপাশি অবস্থিত দুটি পদে সমাস হত। কিন্তু পরবর্তীকালে সংস্কৃতে সমাসের ঘনঘটা দেখা গেল।

• () প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার ছন্দ ছিল অক্ষরমূলক। অর্থাৎ অক্ষর গুণে গুণে এবং অক্ষরের লঘু সুর মেনে মাত্রা নির্ণিত হত। এতে সুর বা তানের প্রাধান্য ছিল।

 

ছন্দরীতিগত বৈশিষ্ট্য :

বৈদিক ভাষার ছন্দ ছিল অক্ষরমূলক অর্থাৎ অক্ষরের সংখ্যা লঘুগুরু বিচার করে ছন্দ নির্ণিত হত। পরবর্তীকালের মাত্রামূলক ছন্দ পদ্ধতিতে অক্ষর উচ্চারণের কাল বা মাত্রা অনুসারে ছন্দ নির্ণয় করা হত।

 BUY BOOK- Bangla Sahityer Sampurna Itibrtta

সাহিত্যিক নিদর্শন :

 

অগ্নসীলে পুরোহিতং

যজ্ঞস্য দেবস্বত্বিজম।

হোতারং রত্নাধারণম্ ঋগ্বেদ সংহিতা।

 

অনুবাদ : আমি অগ্নির স্তুতি করি, যে অগ্নি পুরোহিত যজ্ঞের স্বর্গীয় ঋত্বিক (দেবগণের) আহ্বানকারী এবং রূপদানকারী (রত্নধারণকারী)

 

3) মধ্য ভারতীয় আর্যভাষার সময়কাল উল্লেখ করে এই পর্বটির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। মধ্যভারতীয় আর্যভাষার সময়কাল আনুমানিক ৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ৯০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত।

মধ্যভারতীয় আর্যভাষাকে তিনটি স্তরে বিভক্ত করা হয়। আদি স্তরের স্থিতিকাল খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ অব্দ থেকে ১ম খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। এই পর্বে অন্যতম ভাষারূপ হল পালি। অশােকের অনুশাসনগুলিতে, বৌদ্ধধর্মশাস্ত্র ত্রিপিটক- পালি ভাষার নিদর্শন আছে। খ্রিস্টীয় ১ম শতক থেকে ৬ষ্ঠ শতক পর্যন্ত মধ্যভারতীয় আর্য ভাষার দ্বিতীয় স্তর। এই পর্বে অঞ্চলভেদে পাঁচটি প্রাকৃতের জন্ম হয়েছেমাহারাষ্ট্রী প্রাকৃত, শৌরসেনী প্রাকৃত, পৈশাচী প্রাকৃত, মাগধী প্রাকৃত, অর্ধমাগধী প্রাকৃত। মাহারাষ্ট্রী প্রাকৃতের নিদর্শন রয়েছে হালেরগাথাসত্তসঙ্গ, বাপতি রাজের গৌড়বহ', প্রবর সেনেরসেতুবন্ধইত্যাদি গ্রন্থে। সংস্কৃত নাটকের শিক্ষিত রমণী রাজপুরুষদের সংলাপে শৌরসেনী প্রাকৃতের ব্যবহার আছে। পৈশাচী প্রাকৃতের সাহিত্যিক নিদর্শন বিশেষ না থাকলেও সুতনুক প্রত্নলিপিতে মাগধী প্রাকৃতের নিদর্শন আছে। জৈন ধর্মসাহিত্যে রয়েছে অর্ধমাগধীর ব্যবহার। ষষ্ঠ খ্রিস্টাব্দ থেকে নবম শতক পর্যন্ত মধ্যভারতীয় আর্য ভাষার অন্ত্যস্তর। এই পর্বে প্রতিটি প্রাকৃত থেকেই এক-একটি অপভ্রংশ ভাষার জন্ম হয়। এই ভাবেই মাহারাষ্ট্রী, শৌরসেনী, পৈশাচী, মাগধী এবং অর্ধমাগধী অপভ্রংশের জন্ম হয়। এইসব অপভ্রংশ ভাষা থেকেই নব্যভারতীয় আর্যভাষার স্তরে বাংলাসহ বিভিন্ন ভারতীয় ভাষার জন্ম হয়।

 BUY BOOK- Bangla Sahityer Sampurna Itibrtta

4) মধ্য ভারতীয় আর্যভাষার বিস্তৃতিকাল লেখ। এর আদি স্তরের পরিচয় দাও।

মধ্য ভারতীয় আর্যভাষা সাধারণভাবে প্রাকৃত ভাষা নামে পরিচিত। এই ভাষার বিস্তৃতিকাল খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ অব্দ থেকে ৯০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত।

 

                  মধ্য ভারতীয় আর্যভাষার তিনটি স্তর লক্ষ করা যায়- আদি, মধ্য অন্ত্য। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতক পর্যন্ত বিস্তৃত আদি স্তরের নিদর্শন হল অশােকের অনুশাসন, বিভিন্ন প্রত্নলিপি এবং পালি সাহিত্য। সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা অবলম্বনে রচিত হয়েছিল অশােকের অনুশাসন প্রত্নলিপিগুলি। অন্যদিকে, হীনযানপন্থী বৌদ্ধদের ধর্মপ্রচারের ভাষা হল পালি। হীনযানপন্থী বৌদ্ধদের প্রচারিত বাণী ধর্মগ্রন্থগুলি এই মধ্য ভারতীয় আর্যভাষায় লেখা। পালি ভাষার মধ্যে কোনাে বিশেষ অঞ্চলের কথ্য ভাষার বৈশিষ্ট্য প্রাধান্য পায়নি বলে এই ভাষাকে সাহিত্যিক ভাষা বলাই শ্রেয়। পালির অপর নাম মাগধী। তাই অনেকেই বলে থাকেন মগধই হল পালি ভাষার উৎপত্তিস্থল। অবশ্য, পালি ভাষার সঙ্গে মাগধী প্রাকৃতের নয়, শৌরসেনী প্রাকৃতের সাদৃশ্য লক্ষ করেছেন সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়। পালি ভাষায় রচিত নিদর্শনগুলির মধ্যে 'ত্রিপিটক' এবং বুদ্ধের জীবনকাহিনি নিয়ে লেখা 'জাতকের গল্প' উল্লেখযােগ্য। পালি ভাষায় লেখা উৎকৃষ্ট কবিতা-সংকলন গ্রন্থ হলসুনিপাদএবং 'থেরগাথা'

 BUY BOOK- Bangla Sahityer Sampurna Itibrtta

5) মধ্য ভারতীয় আর্যভাষার মধ্য অন্ত্য স্তরের পরিচয় দাও।

মধ্য ভারতীয় আর্যভাষার দ্বিতীয় স্তরটি দ্বিতীয় শতক থেকে ষষ্ঠ শতক পর্যন্ত বিস্তৃত। বিভিন্ন সাহিত্যিক প্রাকৃত এবং বৌদ্ধ সংস্কৃত ভাষায় এই পর্বের নিদর্শন পাওয়া যায়। কথ্য বৈদিক ভাষা খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে প্রাকৃত ভাষার রূপ লাভ করে। জিশুখ্রিস্টের জন্মের আগেই এই প্রাকৃত ভাষা অঞ্চলভেদে চারটি পৃথক রূপ পায়

 

উত্তর-পশ্চিমা,

 

দক্ষিণ-পশ্চিমা,

 

প্রাচ্যা মধ্যা এবং

 

প্রাচ্যা।

 

প্রাকৃত ভাষার দ্বিতীয় স্তরে গিয়ে উত্তর-পশ্চিমা রূপটি থেকে পৈশাচী প্রাকৃত, দক্ষিণ-পশ্চিমা রূপটি থেকে শৌরসেনী প্রাকৃত মহারাষ্ট্রী প্রাকৃত, প্রাচ্যা-মধ্যা রূপটি থেকে অর্ধ-মাগধি প্রাকৃত, প্রাচ্যা রূপটি থেকে মাগধী প্রাকৃত ভাষার উৎপত্তি হয়। এই পাঁচটিই সাহিত্যিক প্রাকৃত। আদর্শ প্রাকৃত ভাষা হিসেবে সংস্কৃত নাটকে সাধারণ মানুষের সংলাপে বা কাব্যে মহারাষ্ট্রী প্রাকৃত ব্যবহৃত হত। সংস্কৃত নাটকে শিক্ষিত নারী এবং রাজপুরুষের কণ্ঠে শৌরসেনী প্রাকৃত ব্যবহৃত হয়েছে। পৈশাচী প্রাকৃতের সাহিত্যিক নিদর্শন তেমন না থাকলেও মাগধী প্রাকৃতের নিদর্শন রয়েছে সুতনুক প্রত্নলিপিতে। জৈন ধর্মসাহিত্য রচিত হয়েছে অর্ধমাগধী প্রাকৃতে। মধ্য ভারতীয় আর্যভাষার মধ্য পর্বে বিভিন্ন প্রাকৃত ভাষা ছাড়াও বৌদ্ধ সংস্কৃত ভাষার নিদর্শনও পাওয়া যায়। 'মহাবৈপুল্যসূত্রম, 'ললিতবিস্তর', 'সদধর্মপুণ্ডরীক' প্রভৃতি গ্রন্থ বৌদ্ধ সংস্কৃত ভাষা বা 'গাথা ভাষা' নিদর্শন।

 

                     মধ্য ভারতীয় আর্যভাষার অন্ত্য-স্তরে (সপ্তম অষ্টম শতাব্দী) সাহিত্যিক প্রাকৃতের কথ্যবূপগুলি থেকে পৃথক পৃথক অপভ্রংশের জন্ম হয় এবং শেষ স্তরে জন্মলাভ করে অবহটঠ। এই স্তরে এসে তাই তৈরি হয় পৈশাচী, মহারাষ্ট্রী, শৌরসেনী, মাগধী এবং অর্ধমাগধী অপভ্রংশ-অবহটঠের। এই পাঁচটি ভাষা থেকেই নব্য ভারতীয় আর্যভাষার যুগে বাংলা প্রভৃতি আধুনিক ভাষাগুলি জন্মলাভ করে।

 

 BUY BOOK- Bangla Sahityer Sampurna Itibrtta

6) নব্য ভারতীয় আর্যভাষা বলতে কী বোঝ ? এর ধ্বনিতাত্ত্বিক রূপতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট আলোচনা করো

 

খ্রিস্টীয় দশম-দ্বাদশ শতাব্দীর সময় মধ্য ভারতীয় প্রাকৃত অপভ্রংশ ভাষা থেকে জাত যেসব আঞ্চলিক ভাষা বিভিন্ন প্রান্তে উদ্ভূত হয়েছিল এবং আজও বিভিন্ন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে চলেছে তাদের নব্য ভারতীয় আর্যভাষা বলা হয়। যেমন- বাংলা, ওড়িয়া, অসমীয়া, ভোজপুরী, মারাঠি, হিন্দি, গুজরাটি, নেপালি, বাঘেলী ইত্যাদি I নব্য ভারতীয় আর্যভাষার দুটি শাখা সিংহলী এবং জিপুসী বা রােমানী বর্তমানে শুধু ব্হি্ভারতেই প্রচলিত। শ্রীলঙ্কা বা সিংহলের ভাষা 'সিংহলী' মূলতঃ 'প্রতীচ্য প্রাকৃত' (অপর মতে 'প্রাচ্য প্রাকৃত') থেকে উদ্ভূত এলু নামক অবহটঠ-স্থানীয় ভাষা থেকে হয়েছে। এই ভাষায় রচিত সাহিত্যের নিদর্শন পাওয়া যায় খ্রীঃ অষ্টম শতাব্দী থেকেI

 

ধ্বনিতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য:

A)‘’-এর জায়গায় ''-উচ্চারণের প্রবণতা। সাধারণত , , ক্ষ এবং -ফলা যুক্ত ব্যঞ্জনের পূর্ববর্তী'-কার-এর উচ্চারণের ক্ষেত্রেই এই প্রবণতা লক্ষ করা যায়। যেমনঅতি > ওতি; অতুল > ওতুল; লক্ষ > লােকখাে; সত্য > শােত্তো।

 

B) শব্দের শুরুতে শ্বাসাঘাত থাকলে শব্দের মধ্যে শেষে অবস্থিত মহাপ্রাণ (বর্গের দ্বিতীয় চতুর্থ বর্ণ) ধ্বনি অল্পপ্রাণ ধ্বনিতে (বর্গের প্রথম তৃতীয় বর্ণ) পরিণত হয়। যেমনমধু > মদু; বাঘ > বাগ; বলছি > বলচি; মাঠ > মাট।

 

C) অভিশ্রুতির ব্যাপক ব্যবহার এই উপভাষার একটি অন্যতম প্রধান লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য। যেমনকরিয়া > কইর্যা > করে; দেখিয়া > দেইখ্যা > দেখে; বলিয়া > বইল্যা > বলে; আজি > আইজ > আজ।

 

D) স্বরসংগতির প্রবণতা এই উপভাষায় লক্ষণীয়। যেমনবিলাতি > বিলিতি; পূজা > পুজো।

 

রূপতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য:

A)  কর্তৃকারক ছাড়া অন্য কারকের বহুবচনে দের বিভক্তি ব্যবহার করা হয়। যেমন- ছেলেদের; বালকদের; মেয়েদের।

 

B)  গৌণ কর্মেকেবিভক্তি এবং মুখ্য কর্মে শূন্য বিভক্তি ব্যবহৃত হয়। যেমনদাদা ভাইকে (গৌণ কর্ম) বই (মুখ্য কর্ম) পড়াচ্ছে; মা শিশুকে (গৌণ কর্ম) চাঁদ (মুখ্য কর্ম) দেখাচ্ছে।

 

C)  অধিকরণ কারকে '' 'তে' বিভক্তির ব্যবহার লক্ষ করা যায়। যেমন- ঘরে যাও; বাড়িতে থেকো।

 BUY BOOK- Bangla Sahityer Sampurna Itibrtta

সামান্য অতীত বােঝাতে প্রথম পুরুষের অকর্মক ক্রিয়াপদে '' বিভক্তি এবং সকর্মক ক্রিয়াপদে 'লে' বিভক্তির প্রয়ােগ। যেমনসে গেল; সে বইটি দিলে; সে কাজটি করলে।

 

D)  সামান্য অতীত কালের উত্তম পুরুষেলাম, ‘লুম, ‘লেম', 'নু' বিভক্তি ব্যবহৃত হয়। যেমন-আমি করলাম; আমি করলুম; আমি করলেম; আমি করনু।

 

E)   মূল ধাতুর সঙ্গে আছ যােগে যৌগিক ক্রিয়াপদ গঠিত হয়ে থাকে। যেমন করিতেছি > করছি; করিয়াছি > করেছি



 +MORE RELATED POSTS

উপভাষা কাকে বলে? কয় প্রকার ও কি কি?? তাদের সীমানা নির্ধারণ কর।

ভাষা কাকে বলে? ভাষার বৈশিষ্ট্য ও অংশ

বাংলা ভাষা ও সাহিত্য 1st semester 1 ও 2 paper suggetion 

পারিভাষিক শব্দ কি বা কাকে বলে | পারিভাষিক শব্দের প্রয়োজনীয়তা ও পরিভাষা তালিকা

 NCF-2005 FOR PRIMARY TET

ধ্বনি পরিবর্তনের রীতি | dhoni poribortoner riti mcq|primary TET

ভারতীয় ভাষা পরিষদ l Bhartiya -arya Bhasha

জীবনস্মৃতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । rabindra nath tagor jibon sriti 

বরেন্দ্রী উপভাষার অঞ্চল বা এলাকা উল্লেখ করে এই উপভাষার রূপতাত্ত্বিক ও ধ্বনিতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য লেখ।

বেকারত্ব কি? এর কারণ , দারিদ্র্যের সংজ্ঞা দাও,  কারণ , ব্যক্তিগত ও গােষ্ঠীগত জীবনে সংস্কৃতির প্রভাব , সংস্কৃতি কি

সামাজিক গোষ্ঠীর সংজ্ঞা , বৈশিষ্ট ও গুরুত্ব

প্রাথমিক গোষ্ঠী ও গৌণ গোষ্ঠীর পার্থক্য গুলো আলোচনা কর।

সামাজিকীকরণ কি l samajikikoron ki সামাজিকীকরণ কি l samajikikoron ki l সামাজিকীকরণে পরিবারের ভূমিকা 

prathomik ghostir songa o boisisto in bengali l প্রাথমিক গোষ্ঠীর ধারণা , বৈশিষ্ট ও গুরুত্ব।

সামাজিক পরিবর্তন কাকে বলেসামাজিক পরিবর্তনের উপাদানসমূহ আলোচনা করো।

সামাজিক স্তরবিন্যাস কী? সামাজিক স্তরবিন্যাসের ধরন কী কী?

সামাজিক পরিবর্তনের কারণসমূহ আলােচনা কর।

বর্ণপ্রথার বৈশিষ্ট্য কী? 'বর্ণ' ও ‘জাতি'-র ধারণার মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ কর।

B.A. (Hons.) Bengali, Bachelor of Arts Honours in Bengali, Syllabu…

WB TET Preparation Tips 2023, Study Material

Philosophy Short Essay Questions | My Best Writer


Videos: -

Videosহাট্টিমাটিম টিম - Hattimatim Tim and more | Bengali Rhymes Collection -1

badam badam kacha badam

করোনা l coronavirus l সময়ে বিদ্যালয়ের অবস্থা । পার্ট-1

করোনা l coronavirus l সময়ে বিদ্যালয়ের অবস্থা । পার্ট -2

আমাদের পেজে আসার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ, এই ভাবে আমাদের পেজে আসুন আর সাহিত্য ও ভাষা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য ও তত্ব পেয়ে যান ।আমাদের সাথে যুক্ত হতে আমাদের ওয়েব সাইট ফলো করুন এবং নিয়মিত ভিসিট করুন। 

আপনার মতামত দিতে চাইলে ইমেল করুন:-
kajemshaikh0365@gmail.com
অথবা , ভিজিট করুন  আমাদের পেজ:-

Classes
Mock Tests
Crack Exams

Website Links click here
Terms & Conditions Privacy Policy
STUDY CARE 
Whatsapp Ask a Doubt

Studycare0365.blogspot.com

Jangipur,Murshidabad

West Bengal, 742213

Call +91 7908497874

Kajemshaikh0365@gmail.com

Site Links

 About Us

• Contact Us

• Disclaimer

• Privacy Policy

• Terms and Conditions

Top Exams

• SSC Exams

• UPSC Exams

• Teaching Jobs

• Railway Exams

• Banking Exams

• Defence Exams

Follow Us

कोई टिप्पणी नहीं:

एक टिप्पणी भेजें

If you have any doubts, let me know or write us Kajemshaikh0365@gmail.com

Featured Post

सामान्य हिंदी की तैयारी Samanya Gyan लुसेंट सामान्य हिंदी PDF सामान्य हिंदी के 51 महत्वपूर्ण प्रश्न Samanya Gyan ke prashn सामान्य हिंदी व्याकरण

सामान्य हिंदी की तैयारी Samanya Gyan लुसेंट सामान्य हिंदी PDF सामान्य हिंदी के 51 महत्वपूर्ण प्रश्न Samanya Gyan ke prashn सामान्य हिंदी व्य...