सोमवार, 20 फ़रवरी 2023

B.A 2ND YEAR 3RD SEMESTER SEC-1 BENGALI FOR GENERAL COURSE FULL SYLLABUS COMPLETE UNIVERSITY OF KALYANI

 


B.A 2ND YEAR  3RD  SEMESTER SEC-1

BENGALI FOR GENERAL COURSE

FULL SYLLABUS COMPLETE

UNIVERSITY OF KALYANI

 

 

1) শিক্ষণ পদ্ধতি কি?

একটি দৃষ্টিভঙ্গি পদ্ধতির জন্ম দেয়, কিছু শেখানোর উপায়, যা শিক্ষার্থীদের শিখতে সাহায্য করার জন্য শ্রেণীকক্ষের কার্যকলাপ বা কৌশলগুলি ব্যবহার করে একটি শিক্ষণ পদ্ধতির  উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে জ্ঞানীয়, আচরণবাদী এবং শেখার গঠনমূলক পদ্ধতি                                                       পাঠদান পদ্ধতি

 

উচ্চ মাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর সকল পর্যায়ে বোর্ড  বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে কোর্সসমূহ শেষ করা  হয় এছাড়া বাস্তব জীবনে জাতীয়  আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় ছাত্রছাত্রীদেরকে উপযোগী করে গড়ে তুলতে কলেজে অনুসরণ করা হচ্ছে বিজ্ঞান  প্রযুক্তি নির্ভর পাঠদান পদ্ধতি এই পাঠদান পদ্ধতির প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্ন সংক্ষেপে বর্ণিত হলো 

 

. কোর্সসমূহের বিন্যাস 

শিক্ষাবর্ষের শুরুতে প্রতিটি কোর্সকে একাধিক সিমেস্টারে ভাগ করে একটি সাধারণ কর্ম-পরিকল্পনা ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তুলে দেয়া হয় যাতে তারা পুরো কোর্স, সিমেস্টার, ক্লাস টেস্ট, টার্মপেপার, মাঠকর্ম  টিউটোরিয়াল  সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করতে পারে 

 

. শ্রেণিকক্ষে পাঠদান

দুটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে শিক্ষক শ্রেণি কক্ষে পাঠদান করে থাকেন;

. নির্দিষ্ট সময়ে কোর্স সম্পন্ন করা;

. প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রী পুরো কোর্সটি সম্যকভাবে উপলদ্ধি করতে পেরেছে কিনা তার নিশ্চয়তা বিধান করা হয়  লক্ষ্যে শিক্ষকগণ লেকচারের পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের প্রয়োজন মাফিক তথ্য  লেকচার সিট সরবরাহ করে থাকেন ছাত্র-ছাত্রীদের অগ্রগতি মূল্যায়নের লক্ষ্যে একাডেমিক কমিটির সভায় বিস্তারিত পর্যালোচনা সাপেক্ষে বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় 

 

. ক্লাসের সময়সীমা  সংখ্যা

কোর্সের পরিধি  শিক্ষার্থীদের গ্রহণ ক্ষমতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে ক্লাসের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয় এবং শিক্ষাবর্ষের শুরুতে কোর্স আউট লাইনের মাধ্যমে ক্লাস সংখ্যা জানিয়ে দেয়া হয় প্রতিটি ক্লাসের সময়সীমা ৪৫ মিনিট

 

. ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক

শ্রেণিকক্ষে পাঠদানকে অধিকতর কার্যকরী  ফলপ্রসু করার জন্য এবং ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়

 

. অতিরিক্ত বিশেষ ক্লাস

 

তীক্ষè মেধাসম্পন্ন ছাত্র-ছাত্রীগণ যাতে সর্বোচ্চ জিপিএ (এচঅ) অর্জন করতে পারে এবং স্বল্প মেধাসম্পন্ন ছাত্র-ছাত্রীরাও যাতে সন্তোষজনক ফলাফল লাভে সক্ষম হয় সে লক্ষ্যে উভয় গ্রæপের জন্য অতিরিক্ত বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়

 

. শিক্ষা সফর 

অত্র কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে কলমে শিক্ষা দেয়ার জন্য শিক্ষা সফরের ব্যবস্থা রয়েছে

 

পাঠকে ফলপ্রসূ করার জন্য শিক্ষক পরিস্থিতি অনুসারে একাধিক পদ্ধতি  কৌশলের সংমিশ্রণে নিজের মতো করে  পাঠ পরিচালনা করতে পারেন পাঠের সাফল্য নির্ভর করে শিক্ষকের বিচক্ষণতা এবং বিষয়জ্ঞান  শিখন পদ্ধতির যথাযথ প্রয়োগের উপর

 

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের প্রধান দায়িত্ব হলো বিষয়বস্তু অনুযায়ী শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর বিকাশ সাধন শিখন-শেখানো পদ্ধতি  কৌশল শিক্ষাক্রমের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর শিখন নিশ্চিতকরণ, অর্থাৎ শিখনফল অর্জন প্রধানত দুইটি বিষয়ের উপর নির্ভরশীল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণটি হচ্ছে শ্রেণিশিক্ষকের সক্রিয় সহযোগিতা  যথোপযুক্ত শিখন-শেখানো পদ্ধতি  কৌশলের সুষ্ঠু প্রয়োগ উভয় ক্ষেত্রেই শিক্ষকের  ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক কথায়, শিক্ষার্থীর শিখন নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে শিক্ষকের চেয়ে উত্তম আর কিছু নেই এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, অনেক কঠিন  জটিল কাজ যা করার জন্য অনেক শ্রম  সময় প্রয়োজন তা যথোচিত পদ্ধতি  কৌশল প্রয়োগে সহজে  কম সময়ে সঠিকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব শিক্ষার্থীর শিখনের ক্ষেত্রেও  নিয়ম প্রযোজ্য শিক্ষক পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে কম পরিশ্রমে এবং অপেক্ষাকৃত কম সময়ে যথোচিত পদ্ধতি  কৌশল প্রয়োগে শিক্ষার্থীর শিখনফল অর্জন নিশ্চিত করতে পারেন

 

2) শিখন শেখানো পদ্ধতি  কৌশলের ধারণা, পদ্ধতি  কৌশলের শ্রেণিবিভাগ

 

পদ্ধতি  কৌশল (Method and Techniques)

 

পদ্ধতি (Method)

 

সুষ্ঠু শিক্ষাদান পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Teaching Methods)

 

শিক্ষক কেন্দ্রিক (Teacher Centered Methods)

 

শিক্ষক কেন্দ্রিক পদ্ধতির একটি উদাহারণ

 

শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক শিখন-শেখানো পদ্ধতি (Student Centered methods)

 

শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক পদ্ধতির একটি উদাহরণ

 

কৌশল (Techniques)

 

সার্থক শিখন-শেখানো প্রক্রিয়ায় শিক্ষকের বিবেচ্য দিক

 

কতগুলো পদ্ধতি

 

কতগুলো কৌশল

 

পদ্ধতি  কৌশল (Method and Techniques)

শিখন-শেখানো পদ্ধতি  কৌশল অনেক ধরনের এর কয়েকটি শিক্ষককেন্দ্রিক এবং কয়েকটি শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিখন-শেখানো প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীর সক্রিয় অংশগ্রহণ শিক্ষালাভে সহায়ক সব পদ্ধতিরই কমবেশি সুবিধা  অসুবিধা আছে এমন কোনো পদ্ধতি বা কৌশল নেই যেটি সকল শিক্ষার্থীর জন্য সমভাবে উপযোগী বা সব ধরনের বিষয়বস্তুর জন্য উপযোগী শিক্ষকের বিভিন্ন পদ্ধতি  কৌশলের উপর দক্ষতা এবং শ্রেণি  পাঠ উপযোগী পদ্ধতি  কৌশলের যথাযথ প্রয়োগের উপর নির্ভর করে শিক্ষার্থীর শিখন সাফল্য এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই যে একটি পাঠ পরিচালনায় শিক্ষককে এক বা একাধিক পদ্ধতির উপর নির্ভর করতে হয় পাঠকে ফলপ্রসূ করার জন্য শিক্ষক পরিস্থিতি অনুসারে একাধিক পদ্ধতি  কৌশলের সংমিশ্রণে নিজের মতো করে পাঠ পরিচালনা করতে পারেন পাঠের সাফল্য নির্ভর করে শিক্ষকের বিচক্ষণতা এবং বিষয়জ্ঞান  শিখন পদ্ধতির যথাযথ প্রয়োগের উপর এজন্য বলা হয় শিক্ষকই সর্বোৎকৃষ্ট পদ্ধতি

 

পদ্ধতি (Method)

পদ্ধতি বা মেথড (Method) হলো কোনও কিছু করার নির্ধারিত উপায়, প্রক্রিয়া বা পথ উপযুক্ত প্রক্রিয়া ব্যতীত কোনো কাজ সম্পাদন করলে তা যথাযথ হয় না পাঠদান পদ্ধতি হলো পাঠদানের প্রক্রিয়া প্রক্রিয়া হবে যথাযথ ওকার্যকর অর্থাৎ শিখনফল অর্জন উপযোগী এক্ষেত্রে বিষয়বস্তু, শিক্ষক, শিক্ষার্থী পারস্পারিক সম্পর্ক সৃষ্টির মাধ্যমে পাঠের লক্ষ্যও উদ্দেশ্য অর্জনের প্রক্রিয়াই হলো পদ্ধতি শিক্ষক যে প্রক্রিয়ায় সার্থক, ফলপ্রসু, কার্যকর পাঠদান করেন, শিখনফল অর্জন করেন তাকে পদ্ধতি বলে 

 

সুষ্ঠু শিক্ষাদান পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Teaching Methods)

 

পদ্ধতি হবে লক্ষ্য ভিত্তিক প্রথমে লক্ষ্য নির্ধারণ করে নিয়ে লক্ষ্যের অনুকূলে বিষয়বস্তু উপস্থাপন  লক্ষ্যে পৌঁছাবার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ সর্বশেষ লক্ষ্য অর্জন  নির্ণয়ের জন্য যথাযথ মূল্যায়ন পদ্ধতি প্রয়োগে একটি সুষ্ঠু সমাধানে পৌঁছানো

 

পদ্ধতি প্রয়োগ কখনও এলোমেলো হতে পারবে না, পদ্ধতি হতে হবে সুপরিকল্পিত

 

পদ্ধতি হতে হবে মনোবিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষার্থীর বয়স, সামর্থ্য, আগ্রহ, ইচ্ছা  অভিরুচি অনুযায়ী শিক্ষা প্রদান করা বাঞ্ছনীয়

 

এটি হবে কর্মভিত্তিক সার্থক পদ্ধতি সমাজ  জীবনভিত্তিক উপাদানের উপর গুরুত্ব আরোপ করে শিক্ষার্থীর সমস্ত জ্ঞানার্জনই জীবনের উপযোগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ধাবিত

 

বিষয়ের ভিন্নতার দিকে যেমন নজর রাখেন তেমনি সমগ্র শ্রেণির শিক্ষার্থীর প্রতি তার দৃষ্টি সদা জাগ্রত থাকে মেধা, গড় মেধা  উচ্চ মেধা তিন শ্রেণির প্রতি সমান দৃষ্টি রেখে তিনি শিক্ষা প্রদান করেন

 

উত্তম পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য হলো শিক্ষার্থীর মনকে যুক্তিও চিন্তাধর্মী করে তোলা শিশুর মন যুক্তি  বিচারধর্মী থাকে না শিক্ষার্থী বড়ো হওয়ার সাথে সাথে তার ভিতরে ধীরে ধীরে যুক্তি  বিচারবুদ্ধি জাগ্রত হয় প্রাথমিক স্তরে মূর্ত বিষয় দিয়ে শুরু করে পরবর্তী উচ্চতর স্তরে বিমূর্ত বিষয়ের অবতারণা করা উচিত

 

শিখন-শেখানো কার্যক্রম পরিচালনার অনেকাংশে নির্ভর করে শিক্ষক কর্তৃক পরিচালিত পদ্ধতি  কৌশলের উপর শিক্ষার্থীদের ক্ষমতা  প্রবণতা এবং পাঠের বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে পদ্ধতি  কৌশল নির্বাচন করা প্রয়োজন পদ্ধতি  কৌশল সঠিক হলে এবং যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হলে শিক্ষার্থী সহজে শিখতে পারে

 

শিক্ষক কেন্দ্রিক (Teacher Centered Methods)

সনাতন  পদ্ধতিতে শুধু শিক্ষকেরই প্রাধান্য থাকে, তিনি একনায়ক পন্থায় গতানুগতিক পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের তথ্য  জ্ঞান সরবরাহ করে শিক্ষা দিয়ে থাকেন প্রশ্নের সাহায্যে শিক্ষার্থীদের ভেতর থেকে তথ্য বের করে আনতে পারেন যে পন্থাই অবলম্বন করেন না কেন শিক্ষক যখন কেন্দ্র বিন্দুতে থেকে শ্রেণি পরিচালনা করেন তখন শিক্ষার্থীরা পরোক্ষ শিখনে উদ্বুদ্ধ হয়, শিক্ষার্থীরা শিক্ষক নির্দেশিত গে ভূমিকা পালন করে তা শিক্ষক কেন্দ্রিক পদ্ধতির অন্তর্গত

 

শিক্ষক কেন্দ্রিক পদ্ধতির একটি উদাহারণ

শিক্ষক কেন্দ্রিক পদ্ধতিতে শিক্ষক শিক্ষণীয় উপদানগুলো নিজের মতো করে সাজিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেন শিক্ষার্থীদের সরাসরি শিক্ষণীয় উপাদানগুলোর সাথে সম্পর্ক থাকে না বিষয়বস্তুর সাথে পরোক্ষভাবে শিক্ষকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে দাতা গ্রহীতার সম্পর্ক গড়ে ওঠে শিক্ষক- শিক্ষার্থী, শিক্ষার্থী-শিক্ষার্থী মিথষ্ক্রিয়া হয় না

 

শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক শিখন-শেখানো পদ্ধতি (Student Centered methods)

শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিখন-শেখানো পদ্ধতি বহুবিধ এখানে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় রাখার কয়েকটিপদ্ধতি সংক্ষেপে উপস্থাপন করা হলো তবে শিক্ষকের অধিক সংখ্যক পদ্ধতি  কৌশলের উপর দক্ষতা থাকা প্রয়োজন তাহলে তিনি যে ক্ষেত্রে যে পদ্ধতি উপযোগি তা প্রয়োগ করতে পারেন

 

শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক পদ্ধতির একটি উদাহরণ

শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী শিক্ষনীয় উপদানগুলো নিজের মতো করে সাজিয়ে শেখে শিক্ষার্থীদের সাথে সরাসরি শিক্ষণীয় উপাদানগুলোর সাথে সম্পর্ক থাকে বিষয়বস্তুর সাথে প্রত্যক্ষভাবে শিক্ষকের সহচর্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে শিক্ষক- শিক্ষার্থী, শিক্ষার্থী-শিক্ষার্থী মিথষ্ক্রিয়া হয় শিখনের একজন সহায়ক বা ফ্যাসিলিটেইটর (Facilitator) হিসেবে কাজ করেন তারা শিখন পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য দায়িত্বশীল হন, কিন্তু শিখন ফলাফল তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না

 

কৌশল (Techniques)

শিখন-শেখানো কার্যক্রম পরিচালনার অনেকাংশে নির্ভর করে শিক্ষক কর্তৃক পরিচালিত পদ্ধতি  কৌশলের উপর শিক্ষার্থীদের ক্ষমতা  প্রবণতা এবং পাঠের বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে পদ্ধতি  কৌশল নির্বাচন করা প্রয়োজন পদ্ধতি  কৌশল সঠিক হলে এবং যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হলে শিক্ষার্থী সহজে শিখতে পারে

 

সফল  সার্থক পাঠদানের জন্য শিক্ষককে যে-কোনো পদ্ধতি বা পদ্ধতির অংশ যে কোনো সময় প্রয়োগ করতে হয়, শিক্ষক একটি বা সুনির্দিষ্ট কয়েকটি পদ্ধতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে পাঠদান করেন না, পরিস্থিতি অনুযায়ী নানা কৌশল প্রয়োগ করে সফল পাঠদান প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হন; এগুলো হলো

পাঠদানের কৌশল

 

3) শিক্ষাদানের কৌশল  শিক্ষাদানের পদ্ধতি 

শিক্ষাদানের কৌশল  শিক্ষাদানের পদ্ধতি হল শিক্ষার উৎস এখানে আমরা শিক্ষার প্রতিটি বিষয় শিখব

 

শিক্ষাদানের কৌশল এবং শিক্ষাদান পদ্ধতি: শিক্ষাকে তাদের জ্ঞান, ধারণা এবং প্রক্রিয়াগুলি বুঝতে এবং প্রয়োগ করতে সক্ষম করার জন্য শিক্ষার্থীদের সাথে সম্পৃক্ততা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে শিক্ষাদান বিভিন্ন উপায়ে গঠিত হতে পারে যেমন শিক্ষণ পদ্ধতি হল পদ্ধতি, শিক্ষাদান পদ্ধতি হল শিক্ষা দেওয়ার একটি উপায়, শিক্ষাদানের কৌশল হল কৌশল এবং শিক্ষাদানের কৌশল হল একটি নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদনের অনন্য উপায় এখানে আজকের বিষয় হল:শিক্ষাদানের কৌশল এবং শিক্ষাদানের পদ্ধতি আসুন তাদের পার্থক্য শিখি

 

 শিক্ষাদানের কৌশল এবং শিক্ষণ পদ্ধতি

শিক্ষার পদ্ধতি: শিক্ষাদান পদ্ধতি হল পদ্ধতি, কৌশল বা শিক্ষার পদ্ধতি বিশেষ করে একটি সংজ্ঞায়িত পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষার পদ্ধতি শব্দটি শ্রেণীকক্ষের নির্দেশের জন্য ব্যবহৃত সাধারণ নীতি বা শিক্ষাবিদ্যাকে বোঝায় শিক্ষণ তত্ত্বগুলি প্রাথমিকভাবে দুটি বিভাগ বা পন্থা” – শিক্ষক-কেন্দ্রিক এবং ছাত্র-কেন্দ্রিক:

 

শেখার জন্য শিক্ষক-কেন্দ্রিক পদ্ধতি: শিক্ষকরা হলেন প্রধান কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষার্থীদের এম্পটি ভেসেলসহিসাবে দেখা হয় যার প্রাথমিক ভূমিকা হল পরীক্ষা এবং মূল্যায়নের শেষ লক্ষ্যের সাথে নিষ্ক্রিয়ভাবে তথ্য (বক্তৃতা এবং সরাসরি নির্দেশের মাধ্যমে) গ্রহণ করা তাদের শিক্ষার্থীদের কাছে জ্ঞান  তথ্য পৌঁছে দেওয়া শিক্ষকদের প্রাথমিক ভূমিকা শিক্ষক-কেন্দ্রিক পদ্ধতির কিছু উদাহরণের মধ্যে রয়েছে: বক্তৃতা পদ্ধতি এবং পুরো দল আলোচনা

2. শেখার জন্য ছাত্র-কেন্দ্রিক পদ্ধতি:শিক্ষক  শিক্ষার্থীরা শেখার প্রক্রিয়ায় সমানভাবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে শিক্ষকের প্রাথমিক ভূমিকা হল শিক্ষার্থীদের শেখার এবং সামগ্রিক বিষয়বস্তু বোঝার প্রশিক্ষন এবং সুবিধা প্রদান করা গোষ্ঠী প্রকল্প, ছাত্র পোর্টফোলিও এবং ক্লাসে অংশগ্রহণ সহ আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক উভয় ধরনের মূল্যায়নের মাধ্যমে ছাত্রশিক্ষা পরিমাপ করা হয় শিশু-কেন্দ্রিক পদ্ধতির কিছু উদাহরণের মধ্যে রয়েছে: ছোট দল আলোচনা, সিমুলেশন, প্রকল্প ইত্যাদি

 

শিক্ষণ পদ্ধতি

শিক্ষণ পদ্ধতি হল শিক্ষাদানের একটি উপায় যা ভালো কর্মক্ষমতাকে উৎসাহিত করে এমন একটি উপায়ের পরামর্শ দেয় একটি দৃষ্টিভঙ্গি পদ্ধতির জন্ম দেয়, কিছু শেখানোর উপায়, যা শিক্ষার্থীদের শিখতে সাহায্য করার জন্য শ্রেণীকক্ষের কার্যকলাপ বা কৌশলগুলি ব্যবহার করে একটি শিক্ষণ পদ্ধতির উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে জ্ঞানীয়, আচরণবাদী এবং শেখার গঠনমূলক পদ্ধতি

 

শিক্ষাদানের কৌশল

শিক্ষাদানের কৌশল হল শিক্ষাদান এবং শেখার প্রক্রিয়ায় একটি নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদনের অনন্য উপায় সুতরাং, এটি পৃথক শিক্ষকদের একটি কৌশল প্রয়োগ করার অনন্য উপায় উদাহরণস্বরূপ, দুইজন শিক্ষক তাদের পাঠ প্রদানের মাধ্যম হিসাবে ছোট দল আলোচনা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কিন্তু প্রত্যেকের আলোচনার প্রক্রিয়া পরিচালনার একটি অনন্য উপায় থাকতে পারে আলোচনা পরিচালনার জন্য কেউ দুজন ছাত্রকে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে; অন্যটি এর জন্য চারজন ছাত্র নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারে

 

শিক্ষণ কৌশল

শিক্ষণ কৌশল হল শিক্ষণ কার্যক্রমের একটি সতর্ক পরিকল্পনা যা কার্যকর শিক্ষণ  শিক্ষা নিশ্চিত করে এটি একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য বা লক্ষ্যগুলির সিরিজ অর্জনের জন্য ডিজাইন করা কর্মের একটি পরিকল্পনা প্রতিটি পাঠের পরিকল্পনা পর্যায়ে শিক্ষক সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষাদানের কোন পদ্ধতি অবলম্বন করবেন, শিক্ষক কেন্দ্রিক নাকি শিশু কেন্দ্রিক

 

বিকাশের পর্যায়- শিশুর বৃদ্ধি এবং বিকাশ সৃজনশীলতা: সংজ্ঞা, পর্যায়, ধারণা, প্রক্রিয়া

পার্থক্য এবং সম্পর্ক

যদিও একটি দৃষ্টিভঙ্গি ব্যক্তিদের দৃষ্টিভঙ্গি বা দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা অবহিত করা হয়, একটি কৌশল একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি সাবধানে পরিকল্পিত কার্যকলাপ ব্যবহার করে; একটি পদ্ধতি একটি সমস্যা সমাধানের পদ্ধতিতে পরিণত হয় যখন একটি প্রযুক্তি হাতের কাছে থাকা পরিস্থিতি সমাধানের নিজস্ব অনন্য উপায়ে পরিণত হয়

 

পদগুলির মধ্যে সম্পর্ক: শিক্ষণ পদ্ধতিগুলি শিক্ষণ পদ্ধতির বিকাশের জন্য একটি ভিত্তি প্রদান করে, প্রতিটি শিক্ষাদান পদ্ধতির উপাদানগুলিকে সংজ্ঞায়িত করার জন্য শিক্ষণ কৌশলগুলিও বিকশিত হয় এবং শিক্ষার কৌশলগুলি একটি কৌশল সম্পর্কে যাওয়ার অনন্য উপায় প্রদান করে অন্য কথায়, শিক্ষণ পদ্ধতি একটি সর্বজনীন সেট হয়ে যায় যেখান থেকে আমরা শিক্ষার পদ্ধতি পাই শিক্ষণ পদ্ধতিগুলিও শিক্ষাদানের কৌশলগুলির জন্ম দেয় যেখান থেকে আমরা নির্দিষ্ট শিক্ষার কৌশল দ্বারা সংজ্ঞায়িত হই

4).শিক্ষাদান পদ্ধতি কত প্রকার?

উঃ বিভিন্ন ধরণের শিক্ষণ পদ্ধতি রয়েছে যা তিনটি বিস্তৃত প্রকারে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে এগুলি হল শিক্ষক-কেন্দ্রিক পদ্ধতি, শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক পদ্ধতি, বিষয়বস্তু-কেন্দ্রিক পদ্ধতি এবং ইন্টারেক্টিভ/অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি

 

5).শিক্ষণ মডেল কি?

উঃ শিক্ষাদানের মডেল হল একটি পরিকল্পনা বা প্যাটার্ন যা পাঠ্যক্রমের আকার দিতে, নির্দেশনামূলক উপকরণ ডিজাইন করতে এবং শ্রেণীকক্ষে নির্দেশনা পরিচালনা করতে এবং অন্যান্য সেটিং করতে ব্যবহার করা যেতে পারে

 

6).শিক্ষার স্তরগুলি কী কী?

উঃ শিক্ষার তিনটি স্তর নিম্নরূপ: স্মৃতি স্তর: চিন্তাহীন শিক্ষা বোঝার স্তর: চিন্তাশীল শিক্ষা প্রতিফলিত স্তর: উচ্চ চিন্তাশীল শিক্ষা

 

7) শিক্ষকের মৌলিক দায়িত্ব  কর্তব্য 

শিক্ষকের মৌলিক দায়িত্ব  কর্তব্য : শিক্ষক শ্রেণীকক্ষের প্রাণ তাকে ঘিরেই পঠন-পাঠন প্রক্রিয়া আবর্তিত হয় তাই তার দায়িত্ব-কর্তব্যও অনেক এসব দায়িত্বের কিছু ব্যক্তিগত, কিছু প্রতিষ্ঠান-প্রশাসন কেন্দ্রিক, কিছু শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক এবং কিছু সহকর্মী কেন্দ্রিক শিক্ষকের মৌলিক কিছু দায়িত্ব  কর্তব্য এখানে তুলে ধরা -

 

ব্যক্তিগত দায়িত্ব-কর্তব্য :

 

. শিক্ষক সময়নিষ্ঠ হবেন সময় মত প্রতিষ্ঠানে হাযির হবেন এবং ছুটির পর প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করবেন

 

. পেশাগত উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণ নিবেন এবং গৃহীত প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়ে পাঠদান করবেন

 

. শিক্ষা সংক্রান্ত আধুনিক কলাকৌশল যেমন আই.সি.টি. ইত্যাদিতে পারদর্শিতা অর্জন করবেন

 

. মাল্টিমিডিয়া ক্লাস গ্রহণে দক্ষতা অর্জন করবেন

 

. পাঠটিকা প্রণয়ন করবেন এবং তদনুসারে ক্লাস নিবেন

 

. সকল শিক্ষাগত  অভিজ্ঞতার সনদপত্র যত্ন সহকারে ফাইলে সংরক্ষণ করবেন

 

. নিজের চাকুরির নিয়োগপত্র, যোগদানপত্র, চাকুরিবহি, বদলি অর্ডারপত্র, অব্যাহতিপত্র, বদলিকৃত প্রতিষ্ঠানের যোগদানপত্র, প্রশিক্ষণ সনদ, স্কেল পরিবর্তনের কাগজ, এককথায় চাকুরির ধারাবাহিক সকল রেকর্ডপত্র সংরক্ষণ করবেন

 

. তিনি হবেন একজন পড়ুয়া সব রকম জ্ঞান অর্জনে তিনি সদা সচেষ্ট থাকবেন

 

. পারিবারিক, সামাজিক  দ্বীনী ক্ষেত্রে সকলের সাথে মিলেমিশে কাজ করবেন

 

১০. মানুষ  অন্যান্য জীবের অধিকার ক্ষুণন করবেন না

 

১১. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে আল্লাহ  তার রাসূলের আনুগত্য হবে তার জীবনের ব্রত

 

প্রতিষ্ঠান-প্রশাসন কেন্দ্রিক দায়িত্ব-কর্তব্য :

 

. কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করবেন

 

. কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত কর্মস্থল ত্যাগ করবেন না এবং কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকবেন না

 

. নৈমিত্তিক ছুটিসহ যে কোন ছুটির জন্য কর্তৃপক্ষকে আগেভাগে জানাবেন এবং ছুটি মঞ্জুর করে নিবেন

 

. চাকুরি সংক্রান্ত নিজের প্রয়োজন  সুবিধা-অসুবিধার কথা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে জানাবেন

 

. প্রতিষ্ঠান প্রধান, ব্যবস্থাপনা পরিষদ  উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখবেন কোন কারণে মনোমালিন্য লে তা মিটিয়ে ফেলতে চেষ্টা করবেন

 

. বেতন বিল সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করবেন এবং সময় মত তা গ্রহণ করবেন

 

. হাযিরা বহি থাকলে তাতে যথাসময়ে স্বাক্ষর করবেন এবং ডিজিটাল হাযিরা থাকলে তাতে টিপ দিবেন

 

. প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ যখন যে নির্দেশ দিবেন তখন সেই নির্দেশ পালন করবেন

 

. মাধ্যমিক  উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এবং শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশনা মেনে চলবেন

 

১০. অফিস থেকে তার কাছে কোন কাগজপত্র পূরণ করে দিতে বললে তা যথারীতি পূরণ করে দিবেন

 

১১. প্রতিষ্ঠানের অফিসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবেন এবং প্রতিষ্ঠানে এসে প্রধানের সঙ্গে দেখা করবেন; যাওয়ার সময় বলে যাবেন

 

১২. সময় মত .সি.আর. পূরণ করে অফিসে জমা দিবেন (সরকারী চাকুরীজীবিদের ক্ষেত্রে)

 

শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক দায়িত্ব-কর্তব্য :

 

. ক্লাস রুটিন অনুযায়ী সময় মত শ্রেণীকক্ষে হাযির হবেন এবং নির্ধারিত সময়ে শ্রেণীর কার্যক্রম শেষ করবেন

 

. শিক্ষার্থীদের নাম হাযিরা করবেন

 

. শিক্ষার্থীদের নাম, ঠিকানা  মোবাইল নম্বর ডায়েরিতে লিখে নিবেন

 

. পাঠ দানের বিষয় নিজ ডায়রীতে লিখে রাখবেন যেন পাঠদান করতে গিয়ে কোথায় পড়া তা শিক্ষার্থীদের কাছে জিজ্ঞেস করতে না হয় এবং পূর্বপ্রস্ত্ততি ছাড়াই পাঠদান করা না হয়

 

. বিএড/এমএড প্রশিক্ষণ থেকে লব্ধ জ্ঞান অনুযায়ী শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক পাঠদান করবেন যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠ গ্রহণে সবসময় সক্রিয় থাকে

 

. শিখনফল অর্জিত হচ্ছে কি-না তা মূল্যায়ন করবেন

 

. তার ক্লাসগ্রহণ যেন আনন্দঘন হয়,যান্ত্রিক না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন

 

. পাঠ আয়ত্ব করার কৌশল শিখাবেন

 

8)শিশুর পাঠদান পদ্ধতি 

শিশুর পাঠদান পদ্ধতি : যে কোন শিক্ষণ-শিখন কার্যক্রমের সঙ্গে যেমন প্রত্যক্ষভাবে পাঠ্যবিষয়/পাঠ্যবই, শ্রেণীকার্যক্রম, পাঠটীকা যুক্ত তেমনি পরোক্ষভাবে পাঠ্যক্রম  পাঠপরিকল্পনার প্রয়োজন শিশুর পাঠদান তথা শিক্ষণ-শিখন কার্যক্রমের সঙ্গেও বিষয়গুলো সমানভাবে জড়িত নিম্নে এসব বিষয় সংক্ষেপে তুলে ধরা হল

 

শিশুর পরিচয় : একজন মানুষ চন্দ্রবর্ষ অনুযায়ী ১৫ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত শিশু তারপর সে প্রাপ্তবয়স্ক ১৪ বছর বয়সে অপ্রাপ্ত বয়স্কতার কারণে ওহোদ যুদ্ধে যোগদান করতে পারেননি কিন্তু পরবর্তীতে ১৫ বছর  সাধারণত  বয়সে শিশু শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করা যায় তবে অধিকাংশ দেশে ১৮ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত শিশু গণ্য করা হয় সে হিসাবে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরাও শিশু কাজেই শিশুর পাঠদান পদ্ধতির আওতায় শিশু শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শামিল তে পারে

 

শিশুর পাঠদান : শিশুদের শিক্ষণ-শিখন কার্যক্রমের অপর নাম শিশুর পাঠদান শিশুকে কীভাবে পড়ালে পাঠদান ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে মনোবিজ্ঞানী  শিক্ষাবিদরা অনেক গবেষণা করেছেন, করছেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন  ক্ষেত্রে রুশো, পেস্তালৎসি, ফ্রয়েবল, হার্বাট, মন্তেসরী প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য এরা সবাই পাশ্চাত্যের মানুষ আমরা তাদের শিক্ষানীতি ধার করে এনে নিজেদের দেশে চালু করি অথচ দরকার এই মাটির সন্তানদের দ্বীন, চাহিদা, প্রয়োজনীয়তা ইত্যাদির আলোকে  মাটির সন্তানদের দ্বারা গবেষণা  উদ্ভাবন হ্যাঁ, তাদের পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া যাবে কিন্তু মূল কাজ আমাদের মতো করে আমাদেরই করতে হবে

 

যাহোক আমরা যে শিশুদের পড়াই বয়স  শ্রেণীভেদে তাদের বই সরকারী পাঠ্যপুস্তক বোর্ড অথবা সংস্থা/ব্যক্তি বিশেষের লেখা শিক্ষক হিসাবে বই নির্বাচনের দায় তে শিক্ষকগণ এক প্রকার মুক্ত তবে পাঠদান শ্রেণীশিক্ষককেই করতে হয় আমরা জানি, পাঠদান  পাঠগ্রহণ একটি সম্মিলিত কাজ বা টিম ওয়ার্ক এর সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে আছেন শিক্ষক  শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং পরোক্ষভাবে আছেন অভিভাবক, সমাজ  সরকার শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের কাছে আমানত তাদের যোগ্য মানুষ হিসাবে গড়ে তোলা তাদের দায়িত্ব 

 

9)একজন ভাল শিক্ষকের বৈশিষ্ট্য 

 

একজন ভাল শিক্ষকের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of effective teacher):

 

.সুমধুর ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন:

 

. সুস্বাস্থ্য:

 

. প্রেরণা:

 

. নবীন মানস:

 

. শিশুরঞ্জন মানসিকতাসম্পন্ন:

 

. মৌলিকতা:

 

. নমনীয়তা:

 

. চাহনী  বাকশৈলী:

 

. রসিকতা বােধ:

 

১০. দৃঢ় মানসিকতা:

 

১১. উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা:

 

১২. মার্জিত পােষাক:

 

. নেতৃত্বদান:

 

. উদ্যমশীলতা:

 

. সামাজিকতাবােধ:

 

.মুদ্রাদোষমুক্ত:

 

.অধ্যয়নশীল:

 

. শিখন পদ্ধতি সংক্রান্ত জ্ঞান:

 

. আত্মমূল্যায়ন:

.সুমধুর ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন:

সার্থক শিক্ষক সৌম্য মধুর ব্যক্তিত্বের অধিকারী হবেন প্রথম দর্শনেই শিক্ষকের যে বৈশিষ্ট্যটি শিক্ষার্থীর মন কাড়ে, তা হলাে তার শান্ত মধুর প্রসন্ন ব্যক্তিত্ব শিক্ষকের সুমধুর ব্যক্তিত্ব প্রতিটি শিক্ষার্থীর মনে তার প্রতি স্বাভাবিক প্রীতি  শ্রদ্ধার ভাব জাগিয়ে তােলে

 

. সুস্বাস্থ্য:

শিক্ষক হবেন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী কর্মোদ্যম  প্রাণময়তা, শান্ত মেজাজ  পরিমিতিবােধ শিক্ষকতা পেশার জন্য অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য সুস্বাস্থ্য ছাড়া  গুণগুলির অধিকারী হওয়া সম্ভব নয়

 

. প্রেরণা:

উদ্দীপনা সঞ্চারকারী  সুশিক্ষক শিক্ষার্থীর হৃদয়ে শিক্ষার্জনের অনুকূল প্রেরণা  উদ্দীপনার কলাকৌশল প্রয়ােগে সুনিপুণ হবেন নিরানন্দ শিক্ষাদান  কৃত্রিম নিয়ম-শৃঙ্খলা শিক্ষার্থীর স্বাভাবিক বিকাশের পরিপন্থী কাজেই শিক্ষককে এমন সব কৌশলের চর্চা করতে হবে যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে পাঠে মনযােগী হবে

 

. নবীন মানস:

শিক্ষকের স্বাভাবিক সহজতাই তাকে রাখে কর্মময়, চির নবীন  প্রাণবন্ত নবীন মনই তাকে শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরাগী করে তােলে অনুরাগের প্রতিফলনে তিনি শিক্ষার্থীদের আপনজন হওয়ার যােগ্যতা, অধিকার  গৌরব লাভ করেন

 

. শিশুরঞ্জন মানসিকতাসম্পন্ন:

স্বার্থক শিক্ষক হবেন শিশুরঞ্জন মনের অধিকারী শিশুকে ভাল না বাসলে তিনি শিশুর সজীব মনের ইচ্ছা, অনিচ্ছা, স্বপ্ন-সাধ, আশা আকাক্ষা, আনন্দ বেদনা, অনুরাগ অভিমান সম্পর্কে জানতে পারবেন না 

রবীন্দ্রনাথ বলেছেন কী শিখাব, তা ভাববার কথা বটে; কিন্তু যাকে শিখাব তার সমস্ত মনটা কী করে পাওয়া যেতে পারে, সেটাও কম কথা নহেশিক্ষকের সুমধুর মনােভঙ্গি, সহজ প্রসন্নতা, সাহায্যদানের সদিচ্ছা অতি সহজেই শিক্ষক  শিক্ষার্থীকে ঘিরে প্রীতিময় পরিমণ্ডল রচনা করে এবং এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্জন অনায়াস, আনন্দময় এবং অর্থবহ হয়ে ওঠে

. মৌলিকতা:

মৌলিকতা সুশিক্ষকের একটি মূল্যবান সম্পদ তার পরিচয়ের স্বাক্ষর বহন করে তার স্বকীয় বৈশিষ্ট্য বিদ্যালয়ের মতাে শিক্ষামূলক সামাজিক প্রতিষ্ঠানে মৌলিক গুণসম্পন্ন শিক্ষকের প্রয়ােজনীয়তা এবং তার গুণের প্রয়ােগ অপরিহার্য

. নমনীয়তা:

চিত্তের প্রসার  নমনীয়তা শিক্ষককে বিচিত্র ধরনের মানুষের মধ্যেও বিবিধ পরিবেশে সামঞ্জস্য বিধানের দক্ষতা দান করে এর উৎস হচ্ছে অহং শূন্যতা মানিয়ে চলবার ক্ষমতার সঙ্গে অন্তরে যে সহানুভূতি, সহৃদয়তা এবং নমনীয়তার স্পর্শ থাকে, তার মূলে থাকে অহংশূন্যতার অকপট গুণটি

. চাহনী  বাকশৈলী:

সুশিক্ষকের শিক্ষণকর্মের দুটি চমৎকার কলাকৌশল হলাে চাহনী  বাকশৈলী একটি অস্ফুট অপরটি ফুট চোখের চাহনী অস্ফুট হলেও ক্ষেত্র বিশেষে এটি বাকভঙ্গিকেও গৌণ করে দিতে পারে বিস্ময়কর শব্দ চেতনা, প্রচুর শব্দ ভাণ্ডার বাক চাতুর্য এবং শব্দ  বাক্য প্রয়ােগে প্রয়ােজনানুগ সংকোচন প্রসারণ, উচ্চ- নিচ স্বর  সংযম শিক্ষকের প্রকাশ ভঙ্গিকে সংবেদনশীল, মনােজ্ঞ  অর্থবহ করে তােলে

. রসিকতা বােধ:

সুশিক্ষক অবশ্যই হবেন সুরসিক তিনি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনন্দ বিতরণ করবেন, তাদের আনন্দের অংশীদার হবেন কিন্তু আনন্দের উপলক্ষ হয়ে ক্রমশ তামাশার কারণ হবেন না পাঠদানে সময়ােচিত রস কৌতুকের স্নিগ্ধ আমেজ  মধুর সম্পর্ক অনুভূত হলে শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠ গ্রহণ হবে স্বচ্ছন্দ

১০. দৃঢ় মানসিকতা:

প্রত্যয় দৃঢ় মানসিকতা উত্তম শিক্ষকের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিটি কথায়  কাজে, পােশাক  রুচিতে, পেশায়  কর্তব্য পালনে তিনি আদর্শবান, ধর্মপ্রাণ, সত্যপ্রিয় ব্যক্তিত্বের পরিচয় দেবেন কেবলমাত্র আদেশ উপদেশ নয়, শিক্ষক নিজের অভ্যাস, অনুশীলন এবং জ্ঞান অভিজ্ঞতায় লব্ধ বিচিত্র কর্মের মাধ্যমে ছাত্রদের চরিত্রে বাঞ্ছিত পরিবর্তন সাধনে উদ্যোগী হবেন

১১. উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা:

শিক্ষকের অতি বড় হাতিয়ার হলাে প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব বা উপস্থিত বুদ্ধি বিদ্যালয়ের যে কোন আকস্মিক সমস্যার তাৎক্ষণিক মােকাবেলার জন্য অতি দ্রুত একটি বৌদ্ধিক  যৌক্তিক সমাধানে পৌছাতে হয় পরিবেশ পরিস্থিতির সংগে খাপ খাইয়ে যতদূর সম্ভব সৃষ্ট কোন সমস্যার দ্রুত সুরাহার উপযােগী একমাত্র বর্ম উপস্থিত বুদ্ধি

১২. মার্জিত পােষাক:

আদর্শবান শিক্ষকের ব্যক্তিত্বের ভূষণ হলাে সুমার্জিত আচার আচরণ এবং পরিপাটি পােশাক আড়ম্বরের বাহুল্য আসল মানুষের ব্যক্তিত্বকে কৃত্রিম আবরণে ঢেকে রাখে শিক্ষকের কাজ সহজকে নিয়ে সহজ হওয়ায় তার জীবনাদর্শ সহজ জীবন  মহৎ ভাবনা হওয়াই কাম্য

 

 

 

10) আলোচনা পদ্ধতি কি? আলোচনা পদ্ধতির সুবিধা  অসুবিধা? এর বৈশিষ্ট্য?

 

আলোচনা পদ্ধতি কাকে বলে :-

বাংলা ভাষা  সাহিত্য পাঠ উপস্থাপনে সনাতন পদ্ধতির মধ্যে আলোচনা পদ্ধতি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি কোনো একটি সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে কয়েকজনের মিলিত প্রচেষ্টায় পারস্পরিক মত বা ভাব বিনিময় বা কথোপকথনকেই আলোচনা বলে

 

আলোচনা পদ্ধতির মাধ্যমে অনেক সময় কঠিন সমস্যার সহজ সমাধান করা যায় নির্ধারিত এবং অনির্ধারিত যে কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে পারে

 

তাহলে আমরা বলতে পারি- কোনো সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে শ্রেণিতে বা শ্রেণির বাইরে শিক্ষার্থীরা পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে কখনো কখনো শিক্ষকের সহযোগিতায় যখন সমাধানের চেষ্টায় নিয়োজিত হয় তখন তাকে আলোচনা পদ্ধতি বলে

 

আলোচনা পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে মতামত দেয় এবং আলোচনা করে থাকে তাই এটি বক্তৃতা পদ্ধতি থেকে স্বতন্ত্র এবং অপেক্ষাকৃত উন্নত

 

আলোচনার পুরো প্রক্রিয়াটি চলে শিক্ষক অথবা দলনেতার পরিচালনায় এখানে সম্পূর্ণ নিজেদের চেষ্টায় শিক্ষার্থীরা শিখতে পারে  পদ্ধতিটি জোড়া বা দলগতভাবে প্রয়োগ করা যায় শিক্ষার্থীদের নিজস্ব মতামত দানের সুযোগ ঘটে এবং নিজেদের আত্মচেষ্টায় জ্ঞান অর্জনের ফলে তা স্থায়ী হয়

আলোচনা পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য :-

শিক্ষার্থী-শিক্ষক উভয়ে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে

শিক্ষক/দলনেতার নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে  পদ্ধতি পরিচালিত হয়

আলোচনার বিষয়বস্তু পূর্ব নির্ধারিত বা অনির্ধারিত হতে পারে

পদ্ধতি বাস্তবায়নের আগেই বিষয়বস্তু নির্ধারণ, সময় নির্ধারণ, দল গঠন ইত্যাদি কাজ করে নিতে হয়

এটি একটি দলভিত্তিক পদ্ধতি 

শিক্ষক আলোচনার বিষয়বস্তু এবং দিকনির্দেশনা দেন  পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের ভূমিকাই প্রধান শিক্ষক কেবল সহযোগীর ভূমিকা পালন করেন

অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থীর মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকে

প্রশিক্ষিত  দক্ষ শিক্ষকের অভাব  পদ্ধতি বাস্তবায়নের অন্তরায়

শিক্ষার্থী নিজস্ব চিন্তা চেতনায় বিষয়বস্তুর পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি তৈরি করে

 পদ্ধতি প্রয়োগের পূর্বে পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হয়

 

আলোচনা পদ্ধতির সুবিধা :-

শ্রেণির সকল শিক্ষার্থীর সক্রিয় হওয়ার সুযোগ থাকে

নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা  মতবিনিময় করে সমস্যা সমাধান করতে পারে বলে মুখস্থ নির্ভরতা কমে যায়

শিক্ষার্থীরা চিন্তাশীল  যুক্তিবাদী হয়

সৃজনশীলতা বিকশিত হয়

শিক্ষার্থীরা স্ব-শিখনে উদ্বুদ্ধ হয়

সকলের যুক্তির ভিত্তিতে সমস্যার সমাধান হয় বলে অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয় এবং শিক্ষার্থীরা সহমর্মী হয়

জীবনের অন্যান্য সমস্যা সমাধানের পথ উন্মুক্ত হয় বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা অর্জিত হয়

ভুল  দুর্বলতা সংশোধনের পথ সৃষ্টি হয়

শ্রেণিশৃঙ্খলা রক্ষায় শিক্ষার্থীরা নিজেরা দায়িত্বশীল হয় বিধায় শিক্ষকের  ব্যাপারে ভাবতে হয় না

শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহযোগিতা, সহনশীলতা, সহানুভূতি  গণতান্ত্রিক মূল্যবোধসহ নানাবিধ মানবিক গুণাবলির বিকাশ ঘটে

 

আলোচনা পদ্ধতির অসুবিধা :-

বাংলা বিষয়ে পাঠ উপস্থাপনে বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি হিসেবে আলোচনা পদ্ধতি থাকলেও এর কিছু অসুবিধা রয়েছে নিচে অসুবিধাসমূহ উল্লেখ করা হলো

 

1)পদ্ধতিটির প্রয়োগ সময় সাপেক্ষ

প্রতিটি ধাপের জন্য দেওয়া ৩৫-৪০ মিনিট সময়  পদ্ধতি বাস্তবায়নের জন্য উপযোগী নয় নিম্ন মাধ্যমিক স্তরে  পদ্ধতি কার্যকরী নয় উচ্চ মেধার শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী হলেও মধ্য  নিম্ন মেধার শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী নয় যথাযথ তদারকির অভাবে  পদ্ধতিতে ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে অধিক শিক্ষার্থী সংবলিত শ্রেণিকক্ষে  পদ্ধতি সফলভাবে প্রয়োগ করা যায় না  পদ্ধতি বাস্তবায়নে অনেক সময় শ্রেণিশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয় দক্ষ শিক্ষকের অভাব  পদ্ধতি বাস্তবায়নের অন্তরায়

 

2)আলোচনা পদ্ধতির প্রয়োগ কৌশল :-

উদ্দেশ্যভিত্তিক যথাযথ পরিকল্পনা করে  পদ্ধতি বাস্তবায়নে অগ্রসর হওয়া বাঞ্ছনীয়  ধরনের পরিকল্পনার ৩টি অংশ থাকে যথা :

 

. প্রস্তুতি :

 

শিক্ষার্থী-শিক্ষক উভয়ের প্রস্তুতি আবশ্যক হলেও শিক্ষকের প্রস্তুতি বেশি মাত্রায় প্রয়োজন কারণ তিনি শিক্ষার্থীদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য পরিচালিত করবেন আনুষঙ্গিক উপকরণাদি অন্যান্য উপাদান সংগ্রহ করে বিষয়গুলোকে সুবিন্যস্ত করবেন শিক্ষার্থীরা যাতে সহজে বিষয়টি অনুধাবন করতে পারে, সে জন্য তা মনোবিজ্ঞান  যুক্তিসম্মত হতে হবে বিষয়বস্তুকে সংক্ষিপ্ত আকারে বোর্ডে লিখে দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি থাকবে

 

. আলোচনা :

 পর্বে শিক্ষক শ্রেণি নিয়ন্ত্রণে রেখে সকল শিক্ষার্থী যাতে মনোযোগ দিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করে তা নিশ্চিত করবেন আলোচনায় প্রত্যেক দলের সদস্যবৃন্দ যাতে দলের অন্য সদস্যদের আলোচনা মনোযোগ দিয়ে শোনে এবং সকলের মতামত নিয়ে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সেদিকে খেয়াল করবেন

 

. মূল্যায়ন :

আলোচনা পদ্ধতির সর্বশেষ উপাদান মূল্যায়ন এর তিনটি ধারা থাকবে -

বিষয় সম্পর্কে শিক্ষার্থীর ধারণা মূল্যায়ন;

শিক্ষার্থীর মানসিক ধারণার পরিবর্তন;

আলোচনায় অংশগ্রহণকারীদের জন্য প্রদত্ত নির্দিষ্ট কর্মের মূল্যায়ন

 

11) গ্রন্থগত | বই রিভিউ আলোচনা

 

 একজন গ্রন্থ আলোচক দায়িত্ববোধ এবং বিশ্বাসযোগ্যতার এক বিশেষ ভূমিকায় অবস্থান করেন তাকে সারমর্ম টানতে হয়, প্রাসঙ্গিক থাকতে হয়, লেখার দৃঢ়তা বর্ণনা করতে হয় এবং দুর্বলতাকে চিহ্নিত করতে হয় আমাদের সকলের পক্ষ থেকে তিনি কার্যকারণ এবং সামঞ্জস্যতার সাথে এক বিশেষ কর্তব্যবোধ অনুভব করেন -এইচ জি রিকওভার

 

বই আলোচনা ইতিহাসভিত্তিক কাজগুলোতে এক বিশেষ দূতিয়ালীর কাজ করে একই ক্ষেত্রে অন্যরা যে কাজ করছে তার অন্তর্দৃষ্টি এবং পরিপ্রেক্ষিত একটি বই ধারণ করতে পারে সব প্রধান পেশাভিত্তিক জার্নালগুলো (যেমন: জার্নাল অফ আমেরিকান হিস্টোরি, সিভিল ওয়ার হিস্টোরি এবং ত্রৈমাসিক উইলিয়াম  মেরি) গ্রন্থালোচনা প্রকাশ করে কেউ কেউ এত বেশি আন্তরিক যে জার্নালের প্রায় অর্ধেক পৃষ্ঠায় তারা বই আলোচনা ছাপে 'রিভিউস ইন হিস্টোরি' পত্রিকার সব প্রসঙ্গই বই নিয়ে

 

আপনার আলোচনাটিকে সম্পূর্ণভাবে মার্জিত বা পরিশীলিত একটি কাজ হওয়া উচিত এর শিরোনামে বইয়ের একটি পূর্ণ পরিচিতি থাকা দরকার এখানে থাকবে লেখকের নাম, বইয়ের শিরোনাম, প্রকাশনার স্থান, প্রকাশক, প্রকাশের তারিখ, পৃষ্ঠাসংখ্যা এবং অন্য উপাদান যেমন ম্যাপ এবং ছক

 

মাথায় রাখুন যে বই আলোচনা বইয়ের বিবরণী নয় বইয়ের বিবরণ হল কেবল একটি বইয়ের সারাংশ মাত্র বিপরীতে বই আলোচনা বইয়ের সমালোচনা বিশ্লেষণ করে

 

একটি ভালো আলোচনার বিভিন্ন উপাদান

লেখকের আলোচনার বিষয়  প্রসঙ্গ চিহ্নিত করুন তিনি কেন এই বই লিখেছেন? তিনি কী প্রমাণ করতে চান? বিষয়কে চিহ্নিত করতে পারাটাই যথেষ্ট নয় লেখক যা বলতে চেয়েছেন আপনাকে তা উল্লেখ করতে হবে

কাজের পরিধিকে চিহ্নিত করুন যেমন, কোন সময়কাল নিয়ে লিখিত; উপপ্রসঙ্গ কোনটি?

লেখক তাঁর রচনাকে কীভাবে সাজিয়েছেন তা ব্যাখ্যা করুন তিনি নিজেকে প্রমাণে কতটুকু সফল তা পরিমাপ করুন

সমাধান টানার জন্য লেখক কোন ধরণের প্রমাণাদি ব্যবহার করেছেন তার ব্যাখ্যা দিন নির্দিষ্ট করে বলুন তিনি মুখ্য  গৌণ উৎস ব্যবহার করেছেন- এমন সরলভাবে বলবেন না উৎসের প্রকারভেদ উল্লেখ করুন মৌখিক সাক্ষাৎকার, নিজস্ব গবেষণা, পত্রিকার উপাদান, পরিসংখ্যান এভাবে সুনির্দিষ্ট করে বলুন

লেখকের রচনাভঙ্গিকে মূল্যায়ন করুন যেমন- তিনি কী বর্ণনাত্মক, নাকি বিশ্লেষণাত্মক?

যদি বইয়ের শিরোনাম থেকে বোঝা না যায় তাহলে বইয়ের সাধারণ প্রকৃতি বর্ণনা করুন এটা কী কূটনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক, সামরিক অথবা মনস্তাত্ত্বিক ইতিহাস?

বইটি যদি কোন সিরিজের অংশ হয়, তাহলে তার উল্লেখ করুন

প্রাসঙ্গিক বিষয়ে যদি লেখকের কোন বিশেষ অভিজ্ঞতা বা প্রশিক্ষণ থাকে তাহলে তার উল্লেখ করে বিবরণ দিন

বইয়ের উদ্দিষ্ট পাঠক কারা তা উদঘাটন করুন

 

কার্যপ্রণালি বা পদ্ধতির পরামর্শসমূহ

সমস্ত বইটি সাবধানে পড়ুন মাঝে মাঝে একটু থেমে লেখক কী করার চেষ্টা করছেন তা চিন্তা করুন পরবর্তীতে সাহায্যে লাগতে পারে এমন কিছু লিখে রাখুন প্রত্যেক অনুচ্ছেদের শেষে পড়া থামিয়ে লেখক যা বলতে চেয়েছেন তা কয়েক ছত্রে লিখে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ হবে

আপনার নিজের আলোচনার প্রথম খসড়াটি লিখে ফেলুন এই খসড়াটি দ্বিতীয়বার পুনর্পাঠ করার আগে এক বা দুই দিনের জন্য দূরে সরিয়ে রাখুন

এই পরামর্শগুলো দ্বিতীয়বার খসড়া লেখার আগে আর একবার বিবেচনা করুন

কোথাও পাঠাবার আগে আপনার পাণ্ডুলিপি সতর্কতার সাথে সম্পাদনা করুন

 

ভঙ্গি এবং ব্যাকরণগত যা মনে রাখতে হবে

লেখক এবং বই সম্পর্কে লেখার সময় বর্তমান কাল (Present tense) - লিখতে হবে বইয়ের বিষয় নিয়ে লেখার সময় অতীতকাল ব্যবহার করা যেতে পারে যেমন: লেখক মনে করেন যে হ্যাসলি ঠিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিল...

বইয়ের শিরোনাম বারবার উল্লেখ করবেন না সাধারণত দুর্বল সূচনাবাক্যে লেখক  বইয়ের নামের পুনরাবৃত্তি করা হয়

যখন কাউকে প্রথমবার উল্লেখ করবেন তখন তার সম্পূর্ণ নাম লিখুন

যিনি পূর্বে পড়েননি, তিনি যেন আপনার লেখা পড়ে বইটি 'বুঝতে পারে' এরকম সুনির্দিষ্টভাবে লিখুন

যেখানে প্রয়োজন সেখানে কর্তৃবাচ্যে লিখুন তবে স্মরণে রাখুন যে কখনও কখনও কর্মবাচ্য অধিক উপযোগী

বই থেকে যে বাক্য অথবা শব্দবন্ধ উদ্ধৃতি হিসেবে দেবেন তার পৃষ্ঠা নম্বর বন্ধনীর মধ্যে উল্লেখ করুন

 

যা এড়িয়ে যাবেন

বলুন-"এটা একটি ভাল বই" এমন বলবেন না যে -"আমি মনে করি এটা একটা ভাল বই" কারণ সম্পূর্ণ লেখাটা আপনার নিজের

অশালীন শব্দ মনে রাখবেন যে, বই আলোচনা একটি আনুষ্ঠানিক কাজ

একেবারে অতি সংক্ষেপ করে লেখা

পাঠক জানে বলে ধারণা করা যায় এমন তথ্য বারবার উল্লেখ করা যেমন ধরে নেয়া হয় যে - "জাপান যে ১৯৪১ সালের  ডিসেম্বর পার্ল হারবার আক্রমণ করেছে তা পাঠক জানে"

অতিশয়োক্তি ব্যবহার:- যেমন: এটা এই বিষয়ে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ বই

বই থেকে লম্বা উদ্ধৃতি ব্যবহার নিজের ভাষায় উক্ত কথাগুলো বর্ণনা করাই উত্তম

 

 

12)রিভিউ কী? রিভিউ বা পর্যালোচনা করার নিয়ম  কাঠামো

রিভিউ বা পর্যালোচনা হলো তা যা কোনো বই, চলচ্চিত্র বা অন্য যেকোনো সৃজনশীল কর্মের মূল্যায়ন যা করা হয়ে থাকে গঠনমূলক সমালোচনার নীতি অনুসরণ করে

বাংলা শব্দ পর্যালোচনা ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো review (রিভিউ) আমরা যদি এই ইংরেজি শব্দের ওপর চোখ রাখি তাহলে এর দুইটি অংশ দেখতে পাই, যথা- re এবং view এখানে re-এর অর্থ হলো- আবার কিংবা পুনরায় এবং view-এর অর্থ হলো দেখা বা দর্শন করা তবে যখন এই re এবং view মিলে রিভিউপদটি গঠন করে তখন এর অর্থ আর আবার দেখা, পুনরায় দেখা বা পুনরায় দর্শন করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে ক্ষুদ্রার্থে না থেকে বৃহদার্থ প্রদান করে যেমন- বই পর্যালোচনা, চলচ্চিত্র পর্যালোচনা ইত্যাদি

 

13)রিভিউ বা পর্যালোচনা কী? কীভাবে একটি আদর্শ রিভিউ করতে হয় এবং এর কাঠামো কেমন?

পর্যালোচনা বা রিভিউ কী (What is review)?

অল্প কথায় পর্যালোচনার প্রয়োজনীয়তা

রিভিউ বা পর্যালোচনা কেমন হবে?

রিভিউ বা পর্যালোচনার কাঠামো (কীভাবে রিভিউ লিখতে হয়?)

. সূচনা/ভূমিকা

. বর্ণনা

. মূল্যায়ন

. উপসংহার

পর্যালোচনার সময় যেসব বিষয় মাথায় রাখা জরুরি

পর্যালোচনা বা রিভিউ কী (What is review)?

বাংলা শব্দ পর্যালোচনা  ইংরেজি শব্দ রিভিউয়ের বেশ কয়েকটি প্রচলিত অর্থ হলো- পুনর্বিবেচনা, পুনঃসমীক্ষা, পুনরায় পরীক্ষা করা, অনুসন্ধান, যত্নের সঙ্গে পরীক্ষা ইত্যাদি রিভিউ এর আসল অর্থ হলো কোনো সৃজনশীল কর্মের ব্যবচ্ছেদ যেমন, একটি উপন্যাস পড়ে কারো সেই উপন্যাস সম্পর্কে অনুভূতি কেমন, উপন্যাসটির উপজীব্য কী, লেখক কোন বিষয়ের ওপর লিখেছেন, জনরা (ধরন) কী, লেখকের দর্শন কী, লেখক যা তুলে ধরতে চেয়েছেন তা সঠিকভাবে পেরেছেন কিনা, সার্থকতা  ব্যর্থতা, লেখকের শব্দের খেলা  বাচনভঙ্গি, উপন্যাসের বিভিন্ন অংশে যৌক্তিকতার বিচার করা ইত্যাদি সহ সর্বোপরি সৃজনশীল কর্মটি কেমন হয়েছে তার অল্পবিস্তর ব্যাখ্যাই হলো রিভিউ

 

বাংলা একাডেমির আধুনিক বাংলা অভিধান অনুসারে পর্যালোচনা হলো সর্বোতভাবে আলোচনা এবং সম্যক অনুশীলন ব্যবহারগত দিক বিবেচনায় পর্যালোচনা বা রিভিউয়ের নানান সংজ্ঞা রয়েছে ক্ষেত্র বিবেচনায় এখানে কয়েকটি সংজ্ঞা উল্লেখ করা হলো-

ক্যামব্রিজ ডিকশনারি: Review is a report in a newspaper, magazine, or programme that gives an opinion about a new book, film, etc. (পর্যালোচনা হলো সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন কিংবা অনুষ্ঠানে প্রকাশিত এমন এক ধরনের প্রতিবেদন যা কোনো নতুন বই, চলচ্চিত্র ইত্যাদি সম্পর্কে মতামত প্রদান করে)

 

 পর্যালোচনার প্রয়োজনীয়তা

যারা সাহিত্যের শিক্ষার্থী, তাদের বিভিন্ন সময়ে উপন্যাস  বই পর্যালোচনা করার কাজ অর্পন করা হয় যাকে আমরা সচারচর অ্যাসাইনমেন্ট বলে থাকি আবার যারা বিভিন্ন পত্রিকা  সাময়িকীতে সাহিত্য বিভাগে কাজ করেন তাদেরকে প্রায়ই বইয়ের ওপর পর্যালোচনা করতে বলা হয়ে থাকে চলচ্চিত্র নিয়েও পর্যালোচনার চর্চা কম হয় না বিশ্বের বাঘা বাঘা টেলিভিশন  সংবাদপত্রে প্রায় প্রতিদিনই চলচ্চিত্রের (সিনেমা) পর্যালোচনা প্রকাশ পায়, আর এই ইন্টারনেটের যুগে পর্যালোচনার গুরুত্ব  প্রয়োজনীয়তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে আজকাল যখনই কোনো নতুন বই প্রকাশ হয়  চলচ্চিত্র/সিনেমা মুক্তি পায় তখন সেই বই অথবা চলচ্চিত্র যতই হাতের নাগালে থাকুক না কেন পাঠক এবং দর্শক তা উপভগ করার পূর্বে খোঁজ করে দেখেন তার ওপর কোনো পর্যালোচনা তখন পর্যন্তও প্রকাশ পেয়েছে কি না

 

বই পর্যালোচনাকে আমরা সচারচর বলে থাকি বুক রিভিউ আর চলচ্চিত্র পর্যালোচনাকে বলে থাকি মুভি রিভিউ বা ফিল্ম রিভিউ ভালো মানের পর্যালোচনা শুধু পাঠক বা অডিয়েন্সের ওই নির্দিষ্ট বই কিংবা চলচ্চিত্রের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতেই সহায়তা করে না, ওই বই  চলচ্চিত্র বা সিনেমার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের সবল  দুর্বল দিক তুলে ধরে তাঁদের পেশাদারিত্বের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখতে পারে

 

রিভিউ বা পর্যালোচনা কেমন হবে?

সংজ্ঞা থেকে বোঝা যায়, পর্যালোচনা হতে হবে বুদ্ধিদীপ্ত  গঠনমূলক সমালোচনার নীতি অনুসরণ করে পর্যালোচনা কখনো এক তরফা হয় না অর্থাৎ শুধুই প্রশংসা করলাম, শুধু নেতিবাচক কথা বললাম তেমন নয় নিরপক্ষেতা বজায় রাখতে না পারলে কখনোই আদর্শ পর্যালোচনা করা সম্ভব নয় একজন পর্যালোচক কখনোই কোনো কিছুর অন্যায় প্রশংসা করবেন না কিংবা অন্যায়ভাবে তিরস্কার-গীবতও করবেন না

ক্ষেত্র অনুসারে পর্যালোচনা লিখিত এবং মৌখিক, দুই ভাবেই হতে পারে লিখিত হোক কিংবা মৌখিক হোক, এর দৈর্ঘ্য খুব বেশি হওয়া উচিৎ নয় তবে এর নির্দিষ্ট কোনো মাপ নেই রিভিউ যা করা হবে তার দৌর্ঘ্য, গভীরতা  অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর নির্ভর করে একটি আদর্শ রিভিউয়ের পরিধি

 

আজকাল অনেককেই পর্যালোচনা গিয়ে সারাংশ লিখে ফেলতে দেখা যায় যাকে পর্যালোচনা বলা যায় না কেউ যখন কোনো কিছু নিয়ে পর্যালোচনা করতে চান তখন তাঁর মনে প্রাণে বিশ্বাস করা উচিৎ তিনি একজন উঁচু শ্রেণির সমালোচক বা পর্যালোচক

 

রিভিউ বা পর্যালোচনার কাঠামো (কীভাবে রিভিউ লিখতে হয়?)

নতুন যারা রিভিউ করতে চান তাঁরা অনেকেই রিভিউয়ের ফরম্যাট নিয়ে চিন্তায় থাকেন কিন্তু আমি তাঁদের বলতে চাই- রিভিউয়ের জন্য বিশেষ কোনো ফরম্যাট নেই, রিভিউয়ার যেমন ইচ্ছে তেমন করেই নিজের কাজটি করতে পারেন তবে যা বলতে চান বা লিখতে চান তা যেন পাঠক  আপনার যারা অডিয়েন্স রয়েছেন তাঁরা যেন সহজে বুঝতে পারেন হতে পারে যে বই বা সিনেমার পর্যালোচনা করা হবে তা গুরুগম্ভীর, তাই বলে পর্যালোচকের গুরুগম্ভীর হওয়া উচিৎ না, পর্যালোচনায় শব্দ  বাক্যের ব্যবহার হতে হবে সরল

 

রিভিউ পদটির বেশ কিছু অর্থ রয়েছে যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম তবে ঘুরেফিরে একই রকম রিভিউ মানে হলো কোনো বিশেষ কিছুর মূল্যায়ন  মতামত প্রদান মতামত জনেজনে ভিন্ন হয় একজন একটি জিনিস যেভাবে দেখবেন, ওই একই জিনিস অন্যজন ভিন্নভাবে দেখতেই পারেন

 

যদিও আমি বলেছি, পর্যালোচনার জন্য বিশেষ কোনো কাঠামো অথবা ফরম্যাট নেই, তবুও আমি এখানে কাঠামোর উল্লেখ করছি যাতে করে সম্মানিত পাঠক পর্যালোচনা সম্পর্কে একটি সামগ্রিক ধারণা পেতে পারেন

 

নিচের কাঠামোটি একটি আদর্শ বুক রিভিউ বা বই পর্যালোচনার কাঠামো যা বেশিরভাগ পর্যালোচকই অনুসরণ করেন তবে আমি বলে দিতে চাই যে, আমি মুক্তশৈলীতে (ফ্রি-স্টাইলে) পর্যালোচনা রচনা করতেই পছন্দ করি যাতে নিজের ইচ্ছে মতো বিভন্ন প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ টেনে আনতে পারি

 

 

বইয়ের পর্যালোচনায় সাধারণত চারটি অংশ থাকে, যথা- সূচনা/ভূমিকা, বর্ণনা, মূল্যায়ন এবং উপসংহার

 

. সূচনা/ভূমিকা

বইয়ের শিরোনাম  প্রচ্ছদ নিয়ে আলোচনা

ধরন

লেখকের নাম  পরিচয়

প্রকাশকের নাম, প্রকাশের তারিখ, আইএসবিএন নম্বর, মুদ্রিত মূল্য উল্লেখ করা যেতে পারে তবে গুরুত্বপুর্ণ নয়

. বর্ণনা

অল্প কথায় কিছু বর্ণনা করা যাতে করে পাঠক ওই বইটি সম্পর্কে ধারনা পেতে পারে

প্রধান প্রধান বিষয়গুলো উল্লেখ করা

এই পর্যায়ে পর্যালোচক নিজের মন্তব্য প্রদানে বিরত থাকতে পারলেই ভালো হয়

স্পয়লার দেওয়া উচিৎ নয় যদি সে বই বাজারে একদমই নতুন  নতুন বলে বিবেচিত হয়

. মূল্যায়ন

বইয়ের মধ্য থেকে বেশ কিছু উক্তি উল্লেখ করা যেতে পারে

সংক্ষিপ্ত নিজের ভাষায় সারাংশ উপস্থাপন

উল্লেখিত বিষয়ের ওপর নিজের দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োগ

চরিত্র  বাচনভঙ্গির ওপর আলোচনা করা যেতে পারে

মতামত দিতে গিয়ে অনুচ্ছেদ প্রণয়নে খেয়াল রাখা উচিৎ যাতে করে প্রতিটি ভিন্ন উক্তি, চরিত্র  অন্য যেকোনো কিছু স্বাধীন অনুচ্ছেদে অবস্থা করে

. উপসংহার

উপরে উল্লেখিত উক্তি, চরিত্র, ব্যাখ্যা  অন্য যা কিছু রয়েছে তার সংক্ষিপ্ত উপস্থাপন এখানে চুড়ান্ত মতামত প্রদান করা উচিৎসুন্দর একটি সমাপ্তিবাক্যের দ্বারা পর্যালোচনা শেষ করা রেটিং প্রদান (ঐচ্ছিক, তবে বহুল ব্যবহৃত এবং ব্যক্তগতভাবে আমার পছন্দ নয়)

পর্যালোচনার সময় যেসব বিষয় মাথায় রাখা জরুরি

পর্যালোচক একটি বিশেষ কাঠামো (যেমন- উপরের চার () অংশের কাঠামো) অনুসরণ করে পর্যালোচনা করবেন নাকি মুক্তশৈলীতে পর্যালোচনা করবেন সেটি একান্তই পর্যালোচকের ইচ্ছের ব্যাপার তবে পর্যালোচনার সময় নিম্নোক্ত বিষয়গুলো খেয়াল রাখতেই হবে বিষয়গুলো হলো-

যা কিছুর রিভিউ বা পর্যালোচনা করা হবে তার নাম, ধরন, প্লট, দৈর্ঘ্য, গভীরতা ইত্যাদি সম্পর্কে উল্লেখ করতে হবে তবে (মুক্তশৈলীতে) এটি শুরুতে উল্লেখ করতে হবে এমন কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম মেনে চলা ঠিক নয়, পর্যালোচক তাঁর মেধাকে কাজে লাগিয়ে ধীরেধীরে এগুলো পর্যাক্রমে বর্ণনা করে যেতে পারেন

মুক্তশৈলীতে বা ফ্রি-স্টাইলে রিভিউয়ের শুরু কেমন হবে তা নির্ভর করে রিভিউয়ারের ওপর শুরু যেভাবেই হোক সেটি যেন আকর্ষণীয় হয়, ইতিবাচক হলে ভালো তবে এমন একটি বাক্য দিয়ে শুরু হোক, যা পাঠক পড়ামাত্র লুফে নেবার জন্য আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারে কারণ বই রিভিউয়ের অন্যতম একটি দিক হলো, লেখক  পাঠকের মধ্যে পর্যালোক কর্তৃক একটি সম্পর্ক গড়ে দেওয়া

ধরন (genre) উল্লেখ করা করা বাধ্যতামূলক বলে মনে করি

গল্প, উপন্যাস, সিনেমার ক্ষেত্রে কয়েকটি মূল চরিত্র বা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র নিয়ে কিছু উল্লেখ করতে হবে যা হতে হবে কোন চরিত্রটি কেমন  কীভাবে সাজানো হয়েছে, চরিত্রের ভূমিকা কী, চরিত্রের যৌক্তিকতা কতটুকু, চরিত্রের স্বার্থকতা  ব্যার্থতা ইত্যাদি উল্লেখ করা জরুরি তবে প্রবন্ধে কিংবা ডকুমেন্টারির ক্ষেত্রে ওখানে উল্লেখিত বিশেষ কিছু টার্ম, থিওরি কি-ওয়ার্ড নিয়ে বলা যায় যা ছাড়া বইটি মূল্যহীন 

কিছু উক্তি/সংলাপ উল্লেখ করা যেতে পারে ব্যাখ্যাসহকারে

উপজীব্যের সাথে বই বা সিনেমার কতটুকু সম্পর্ক আছে বা নেই তা উল্লেখ করা যেতে পারে লেখক তাঁর গ্রন্থে বা পরিচালক তাঁর সিনেমা বা মুভিতে বিশেষ কোনো স্বীকৃত কনসেপ্ট বা ধারণার উল্লেখ করলে সেটি সার্থকভাবে চরিত্রায়নে প্রতিফলিত কিনা তাও খতিয়ে দেখা জরুরি

উত্তম পুরুষ, নাম পুরুষ নাকি সর্বজ্ঞ লিখনরীতিতে (ওমনিসিয়েন্ট রাইটার) লেখক বইটি লিখেছেন তাও বলা যেতে পারে অর্থাৎ বইয়ের কথকের সম্পর্কে একটু ধারণা দেওয়া যেতে পারে এটি অনেক সময় সিনেমা বা ফিল্ম রিভিউয়ের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য

গ্রন্থে ইলাস্ট্রেশন বা চিত্রের ব্যবহার থাকলে অবশ্যই তার যৌক্তিকতা  গুণাগুণ বিচার করতে হবে আর সিনেমার ক্ষেত্রে বিভিন্ন গ্রাফিক্সের ব্যবহার, মধ্যে মেকিং, এডিটিং, সাউন্ড কোয়ালিটি, গান, ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর গুরুত্বের সাথে আলোচনা করতে হবে

অনেককেই দেখা যায় লেখকের পূর্বের কোনো বই বা পরিচালকের পূর্ব কোনো সিনেমার সাথে একটু তুলনা করতে তবে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ নয় তবে পর্যালোচক চাইলে এরকম তুলনা করতেই পারেন তবে কাঠামোবদ্ধ পদ্ধতিতে পর্যালচনা করলে এটি এড়িয়ে যাওয়া উচিৎ পাশাপাশি পর্যালোচকের যদি মনে হয় তিনি যেটির রিভিউ করছেন সেটি বিশেষ কিছু থেকে প্রভাবিত বা অনুপ্রাণিত, তাহলেও তাও উল্লেখ করতে পারেন

রিভিউ হতে হবে ভালো-মন্দ-ভালোঅর্থাৎ স্যান্ডউইচ ফিডব্যাকনীতি অনুসরণ করে

রিভিউ যেভাবেই করা হোক না কেন, উপস্থাপনের ভাষা হতে হবে ইতিবাচক এবং কোনো ভাবেই  আপত্তি কর হওয়া যাবে না

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে রিভিউয়ের চূড়ান্ত রুপ দেওয়ার পূর্বে মধ্য বিরতি দিয়ে তা বেশ কয়েক বার পড়ে নেওয়া  প্রয়োজন মতো একে আরো সম্পাদনার মাধ্যমে সৌন্দর্য বাড়িয়ে নেওয়া উচিৎ

                      DOWNLOAD PDF


  

MORE RELATED POSTS

উপভাষা কাকে বলে? কয় প্রকার ও কি কি?? তাদের সীমানা নির্ধারণ কর।

ভাষা কাকে বলে? ভাষার বৈশিষ্ট্য ও অংশ

বাংলা ভাষা ও সাহিত্য 1st semester 1 ও 2 paper suggetion 

পারিভাষিক শব্দ কি বা কাকে বলে | পারিভাষিক শব্দের প্রয়োজনীয়তা ও পরিভাষা তালিকা

 NCF-2005 FOR PRIMARY TET

ধ্বনি পরিবর্তনের রীতি | dhoni poribortoner riti mcq|primary TET

ভারতীয় ভাষা পরিষদ l Bhartiya -arya Bhasha

জীবনস্মৃতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । rabindra nath tagor jibon sriti 

বরেন্দ্রী উপভাষার অঞ্চল বা এলাকা উল্লেখ করে এই উপভাষার রূপতাত্ত্বিক ও ধ্বনিতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য লেখ।

বেকারত্ব কি? এর কারণ , দারিদ্র্যের সংজ্ঞা দাও,  কারণ , ব্যক্তিগত ও গােষ্ঠীগত জীবনে সংস্কৃতির প্রভাব , সংস্কৃতি কি

সামাজিক গোষ্ঠীর সংজ্ঞা , বৈশিষ্ট ও গুরুত্ব

প্রাথমিক গোষ্ঠী ও গৌণ গোষ্ঠীর পার্থক্য গুলো আলোচনা কর।

সামাজিকীকরণ কি l samajikikoron ki সামাজিকীকরণ কি l samajikikoron ki l সামাজিকীকরণে পরিবারের ভূমিকা 

prathomik ghostir songa o boisisto in bengali l প্রাথমিক গোষ্ঠীর ধারণা , বৈশিষ্ট ও গুরুত্ব।

সামাজিক পরিবর্তন কাকে বলেসামাজিক পরিবর্তনের উপাদানসমূহ আলোচনা করো।

সামাজিক স্তরবিন্যাস কী? সামাজিক স্তরবিন্যাসের ধরন কী কী?

সামাজিক পরিবর্তনের কারণসমূহ আলােচনা কর।

বর্ণপ্রথার বৈশিষ্ট্য কী? 'বর্ণ' ও ‘জাতি'-র ধারণার মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ কর।

B.A. (Hons.) Bengali, Bachelor of Arts Honours in Bengali, Syllabu…

WB TET Preparation Tips 2023, Study Material

Philosophy Short Essay Questions | My Best Writer


Videos: -

Videosহাট্টিমাটিম টিম - Hattimatim Tim and more | Bengali Rhymes Collection -1

badam badam kacha badam

করোনা l coronavirus l সময়ে বিদ্যালয়ের অবস্থা । পার্ট-1

করোনা l coronavirus l সময়ে বিদ্যালয়ের অবস্থা । পার্ট -2

আমাদের পেজে আসার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ, এই ভাবে আমাদের পেজে আসুন আর সাহিত্য ও ভাষা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য ও তত্ব পেয়ে যান ।আমাদের সাথে যুক্ত হতে আমাদের ওয়েব সাইট ফলো করুন এবং নিয়মিত ভিসিট করুন। 

আপনার মতামত দিতে চাইলে ইমেল করুন:-
kajemshaikh0365@gmail.com
অথবা , ভিজিট করুন  আমাদের পেজ:-

Classes
Mock Tests
Crack Exams

Website Links click here
Terms & Conditions Privacy Policy
STUDY CARE 
Whatsapp Ask a Doubt

Studycare0365.blogspot.com

Jangipur,Murshidabad

West Bengal, 742213

Call +91 7908497874

Kajemshaikh0365@gmail.com

Site Links

 About Us

• Contact Us

• Disclaimer

• Privacy Policy

• Terms and Conditions

Top Exams

• SSC Exams

• UPSC Exams

• Teaching Jobs

• Railway Exams

• Banking Exams

• Defence Exams

Follow Us

कोई टिप्पणी नहीं:

एक टिप्पणी भेजें

If you have any doubts, let me know or write us Kajemshaikh0365@gmail.com

Featured Post

सामान्य हिंदी की तैयारी Samanya Gyan लुसेंट सामान्य हिंदी PDF सामान्य हिंदी के 51 महत्वपूर्ण प्रश्न Samanya Gyan ke prashn सामान्य हिंदी व्याकरण

सामान्य हिंदी की तैयारी Samanya Gyan लुसेंट सामान्य हिंदी PDF सामान्य हिंदी के 51 महत्वपूर्ण प्रश्न Samanya Gyan ke prashn सामान्य हिंदी व्य...