১) বাংলা লিপির উদ্ভবের ইতিহাস ও বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করো সংক্ষেপে বর্ণনা করো।
বাংলা লিপির উদ্ভব ও বিকাশ: ভারতে প্রাপ্ত প্রাচীনতম লিপির সন্ধান পাওয়া যায় অশোকের বিভিন্ন অনুশাসনে। অশোকের অনুশাসনে দু-প্রকার লিপি পাওয়া যায়—একটি ব্রাহ্মী, অপরটি খরোষ্ঠী। আরামীয় লিপি থেকে ভারতের আদিলিপি ব্ৰাহ্মী, খরোষ্ঠীর জন্ম বলে লিপি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। খরোষ্ঠী লেখা হত ডান থেকে বাম দিকে এবং সেমেটিক ভাষা লেখার জন্যে এই লিপি ব্যবহৃত হত। ব্রাহ্মী লেখা হত বাম থেকে ডান দিকে, তবে ডান থেকে বাম দিকে লেখার নিদর্শনও রয়েছে । ব্রাহ্মী ব্যবহৃত হত অসেমেটিক ভাষা লেখার জন্যে। এ থেকে আধুনিক নাগরী, বাংলা প্রভৃতি ভারতীয় লিপির জন্ম হয়।
ব্রাহ্মী লিপির প্রসারের ফলে এর নানা আঞ্চলিক রূপ গড়ে উঠেছিল। খ্রিস্টীয় প্রথম-দ্বিতীয় শতাব্দীতে ব্রাহ্মীলিপির তিনটি আঞ্চলিক রূপ হল : (ক)
উত্তর ভারতীয়,
(খ) দক্ষিণ ভারতীয় ও
(গ) বহির্ভারতীয়।
ব্রাহ্মী লিপির উত্তর ভারতীয় রূপটি পরিপূর্ণতা লাভ করে খ্রিস্টীয় চতুর্থ-পঞ্চম শতাব্দীতে অর্থাৎ গুপ্ত যুগে। সেইসময় উত্তর ভারতীয় লিপিকে গুপ্তলিপিও বলা হয়। গুপ্তলিপির দুটি ধারা— পূর্বী ও পশ্চিমা । এই পূর্বী ধারার আবার দুটি উপধারা— পূর্বী ও পশ্চিমা । গুপ্তলিপির পূর্বী ধারার পশ্চিমা উপধারা থেকে খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে সিদ্ধমাতৃকা লিপির জন্ম হয়। খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে সিদ্ধমাতৃকা লিপির যে-জটিল রূপ গড়ে ওঠে, তাকে বলা হয় ‘কুটিল লিপি’। ড. সুকুমার সেন মনে করেন, এই কুটিল লিপি’ থেকেই বাংলা লিপির উদ্ভব। বাংলা লিপির উৎস সম্বন্ধে দুটি মত প্রচলিত
। সেইসময় নাগরী লিপির দুটি প্রকারভেদ ছিল—পূর্বভারতীয় ও পশ্চিম ভারতীয়। ব্যুলারের মতে, খ্রিস্টীয় একাদশ শতাব্দীতে এই পূর্বভারতীয় রূপটি থেকেই প্রত্নবাংলা লিপি গড়ে ওঠে। অন্যদিকে এস এন চক্রবর্তীর মতে, উত্তর ভারতীয় লিপির পূর্বী শাখাটি থেকে স্বতন্ত্র ধারায় খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দীতেই প্রত্নবাংলা লিপির উদ্ভব হয়। যাইহোক, বাংলা লিপির উৎস সম্বন্ধে এ কথা মনে করা যেতে পারে যে, সিদ্ধমাতৃকা লিপির জটিল রূপ কুটিল লিপি থেকেই দুটি পৃথক ধারায় নাগরী ও বাংলা লিপির বিকাশ হয়েছিল।
২) ব্রাহ্মী লিপি থেকে বাংলা লিপি বিবর্তনের বিভিন্ন পর্যায় গুলি আলোচনা করো ।
ব্রাহ্মী লিপি থেকে বাংলা লিপি বিবর্তনের বিভিন্ন পর্যায় । সিন্ধুলিপি ও কীলক লিপি সম্বন্ধে আলােচনা । ব্রাহ্মী লিপির উৎস সম্বন্ধে বিভিন্ন মত l
ব্রাহ্মী লিপি থেকে বাংলা লিপি বিবর্তনের বিভিন্ন পর্যায়
২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ব্রাক্ষ্মীর দুটি আঞ্চলিক রূপ গড়ে ওঠে-উত্তর
ভারতীয় রূপ এবং দক্ষিণ ও বহির্ভারতীয় রূপ। দ্বিতীয় রূপটি থেকেই পল্লব লিপি উদ্ভূত হয়, যা গ্রন্থি, মালয়াল, তামিল, তেলুগু কন্নড় ও সিংহলি লিপি এবং ব্রহ্লাদেশ কম্বােজ শ্যামদেশীয় লিপির জন্ম দিয়েছে। অন্যদিকে, ব্রাত্মী লিপির উত্তর ভারতীয় রূপই হল কুষাণ লিপি (২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)। চতুর্থ শতাব্দীতে অর্থাৎ গুপ্তযুগে কুষাণ লিপি বিবর্তিত হয়ে গুপ্ত লিপি নাম নেয়। এই গুপ্ত লিপি থেকে ষষ্ঠ শতাব্দীতে 'সিদ্ধমাতৃকা' লিপির জন্ম হয়। এই সিদ্ধমাতৃকা লিপি থেকেই সপ্তম শতাব্দীতে কুটিল লিপি উদ্ভূত হয়।
অষ্টম শতাব্দীতে এই কুটিল লিপি ভারতীয় উপমহাদেশে পাঁচটি শাখায় বিভক্ত হয়ে যায়
। কুটিল লিপির 'উত্তর-পশ্চিম ভারত' শাখা অর্থাৎ শারদা লিপি থেকে তিব্বতি, কাশ্মীরি ও গুরুমুখি লিপি, 'উত্তর ও মধ্যভারত’ শাখা থেকে দেবনাগরী, কায়থী ও গুজরাটি লিপি, 'মধ্য এশিয়া' শাখা থেকে খােটানি লিপি এবং 'যবদ্বীপ-বালিদ্বীপ’ শাখা থেকে যবদ্বীপীয় কুটিল লিপি উদ্ভূত হয়েছে।
কুটিল লিপির পঞ্চম শাখা অর্থাৎ 'পূর্ব-ভারত' শাখার লিপি হল প্রত্ন বাংলা লিপি বা গৌড়ী লিপি। নবম শতাব্দীতে
নারায়ণ পালের তাম্রশাসনে লিপির প্রাচীনতম নিদর্শন পাওয়া যায়। এই প্রত্ন বাংলা লিপি থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যে নিম্নলিখিত চার প্রকার লিপি উদ্ভূত হয়েছে-
1) নেপালি
2) ওড়িয়া
3) মৈথিলি
4) বঙ্গলিপি
এইভাবে ব্রাক্ষ্মী লিপি থেকে ক্রমে ক্রমে বঙ্গলিপি বা বাংলা লিপি উদ্ভূত হয়েছে।
৩) সিন্ধুলিপি ও কীলক লিপি সম্বন্ধে আলচনা করো।
সিন্ধুলিপি
১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে সিন্ধু অববাহিকার হরপ্পা এবং মহেনজোদারােতে প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার যে ভগ্নাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছিল, তার মধ্যে থাকা শিলমােহর ও শিলালিপি থেকে সে যুগের লিপির সন্ধান পাওয়া যায়। সেই সিধুলিপি ছিল মূলত চিত্রলিপি, যে লিপিতে প্রায় ৪০০
বিভিন্ন চিহ্নের খোঁজ পাওয়া যায়। এ লিপির সম্পূর্ণ পাঠোদ্ধার এখনও সম্ভব হয়নি। তবে, এই লিপির সঙ্গে সুমেরীয়, প্রােটো-এলমাইট, হিট্টাইট, মিশরীয়, ক্রিট-দেশীয়, চিনা এবং ব্রাক্ষ্মী লিপির কিছু কিছু সাদৃশ্য আছে।
কীলক লিপি:
পারস্যদেশীয় সুমেরীয়রা মেসােপটেমিয়ায় এসে তাদের লিপিপদ্ধতিকে জনপ্রিয় করে কীলক লিপি তৈরি করে। কাঁচা মাটির পাটাতনে বা পাথরের ওপর কীলক বা বাটালি দিয়ে কীলক বা পেরেকের মতাে খোঁচা খোঁচা চেহারার রেখাচিত্র এঁকে এবং রােদে পুড়িয়ে কীলক লিপি তৈরি করা
হত। লাতিন ভাষায় যেহেতু 'Cuneus' শব্দের অর্থ কীলক এবং 'Forma' শব্দের অর্থ 'আকৃতি', তাই বিখ্যাত লিপি বিশারদ টমাস হাইড এই লিপির নাম দেন 'কিউনিফর্ম' (Cuneiform)
অর্থাৎ কীলক লিপি। প্রথম যুগে এটি চিত্রলিপি থাকলেও পরে এটি ভাবলিপি ও ধ্বনিলিপিতে পরিণত হয়। আক্কাদীয় বা আসিরােব্যাবিলনীয় ভাষা এবং প্রাচীন পারসিক ভাষা লেখাতে এই লিপি ব্যবহৃত হত। অধুনালুপ্ত এই লিপির কোনাে উত্তরাধিকারী নেই।
৪) ব্রাহ্মী লিপির উৎস সম্বন্ধে বিভিন্ন মত গুলি আলোচনা করো।
ব্রাহ্মী লিপির উৎস সম্বন্ধে যে বিভিন্ন মত প্রচলিত, সেগুলি নিম্নরূপ-
i. Edward Thomas, সুধাংশু কুমার রায়-এর মতে ব্রাত্মী এসেছে প্রাচীন সিন্ধুলিপি থেকে।
ii. Dowson এবং Cunningham মনে করেন ভারতীয় পুরােহিতরা চিত্রলিপি থেকে ক্রমে ক্রমে ব্রায়ী লিপি রচনা করেন।
iii. William Jones, Kopler, Buhler, Waber প্রভৃতিরা বলেন যে,
ব্রাহ্মী লিপি ফিনিশীয় লিপি থেকে জন্মলাভ করেছে।
iv. আধুনিক লিপি বিশেষজ্ঞ David Diringer ও James বলেন যে, ব্রাহ্মী লিপি আরামীয় লিপি থেকে জন্মলাভ করেছে।
v. Princeep-Rochette বলেন যে, আলেকজান্ডারের আক্রমণ-সূত্রে যে উন্নততর গ্রিকলিপি ভারতে আসে, তা থেকেই ব্রাম্মী লিপি উদ্ভূত।
vi. কেউ কেউ বলেন যে, আরবীয় লিপি থেকে ব্রাহ্মী উদ্ভূত।
vii. Davids বলেন, কিউনিফর্ম অর্থাৎ কীলক লিপি থেকে ব্রাম্মী উদ্ভূত।
viii. Cast বলেন যে, খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম-অষ্টম শতাব্দীতে পশ্চিম এশিয়াসহ বিভিন্ন বিদেশি লিপির দৃষ্টান্তকে সামনে রেখে ভারতীয়রা ব্রাহ্মী লিপি তৈরি করেন
।
ওপরের মতামতগুলির মধ্যে ভাষাবিজ্ঞানীরা চতুর্থ মতটিকে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযােগ্য বলে মনে করেন। তবে একথাও আমরা বিস্মৃত হতে পারি না যে, আরামীয় লিপি বর্ণলিপি, অথচ ব্রাহ্মী লিপি অংশত দললিপি বা অক্ষরলিপি।
৫) কিউনিফর্ম লিপি
কিউনিফর্ম বা কীলক লিপি
কিউনিফর্ম লিপি -র সৃষ্টি, অর্থ, জনপ্রিয়তা, লিপি তৈরি ও লেখার পদ্ধতি, আবিষ্কর্তা, নামকরণ, বিবর্তন, ব্যবহৃত ভাষা, নমুনা, ব্যবহার, লিপির সংস্কার, প্রাপ্ত লিপির পরিনাম ও লিপির পাঠোদ্ধার সম্পর্কে জানবো।
কীলক লিপি বা কিউনিফর্ম লিপি
প্রচলন কাল আনুমানিক ৩২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ
প্রচলিত স্থান সুমেরীয় সভ্যতা
নামকরণ টমাস হাইড
কীলক লিপি
ভূমিকা :- কিউনিফর্ম লিপি বিশ্বের প্রাচীন লিপিগুলোর মধ্যে অন্যতম। অনেক ভাষাবিদ মনে করেন, কিউনিফর্ম লিপি মিশরীয় সভ্যতার হায়ারোগ্লিফিক লিপির থেকেও পুরনো।
শব্দলিপি
প্রকৃতপক্ষে ধ্বনিলিপি স্তরের প্রথম ধাপ হল শব্দলিপি। শব্দলিপির ক্ষেত্রে লিপিতে ব্যবহৃত প্রতীকগুলি এক-একটি শব্দেরই প্রতীক ছিল।
শীর্ষ নির্দেশ
পরবর্তীতে লিপির শব্দচিত্রের রেখাগুলি ক্রমশ সরল, সংক্ষিপ্ত ও সাংকেতিক হয়ে এক-একটি শব্দকে না বুঝিয়ে শুধু তার আদ্য দল কে প্রকাশ করতে লাগল
। এই সরলীকরণের প্রক্রিয়াকে বলে শীর্ষনির্দেশ। এই প্রক্রিয়ায় শব্দলিপি পরিণত হল দললিপিতে।
ধ্বনির প্রতীক
ধ্বনিলিপি বিকাশের শেষ ধাপে এসে লিপিতে ব্যবহৃত প্রতিটি রেখাচিহ্ন এক-একটি দল-এর প্রতীক না হয়ে সেই ভাষায় ব্যবহৃত এক-একটি একক ধ্বনির প্রতীক হয়ে উঠল।
বর্ণলিপি
একক ধ্বনির লিপিই হল বর্ণ। ধ্বনিলিপিকে তাই বর্ণলিপিও বলা যায়। রােমীয় লিপি প্রায় সম্পূর্ণরূপে ধ্বনিমূলক।
আধুনিক লিপি
সবচেয়ে আধুনিক লিপি হল ধ্বনিলিপি। ইতিপূর্বে যা ছিল বিশেষ কোনাে বস্তু বা বিষয় বা ভাবের প্রতীক, তা হয়ে উঠল কোনাে ভাষায় ব্যবহৃত ধ্বনির প্রতীক। এটি তাই উচ্চারণ-ভিত্তিক লিপিপদ্ধতি।
উদাহরণ
গােরুর মুখের ছবি থেকে ক্রমে ক্রমে ‘a’ ধ্বনিচিহ্নের বা বর্ণের সৃষ্টি হয়েছে
। গ্রিক ধ্বনি/বর্ণ ‘a'(আলফা) থেকে এসেছে ইংরেজি বর্ণ ‘a’। এই ‘a’ বর্ণ দিয়ে শুরু হওয়া শব্দের সঙ্গে তাই গােরু-সম্পর্কিত কোনাে কিছুর যােগ না থাকাটাই স্বাভাবিক।
কীলক লিপির জনপ্রিয়তা
সুমেরীয় সভ্যতার মানুষেরা পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতার জন্মভূমি মেসােপটেমিয়ায় এসে তাদের লিপি পদ্ধতিকে জনপ্রিয় করে।
কীলক লিপি ব্যবহারের সময়কাল
কিউনিফর্ম লিপি আনুমানিক ৩২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ব্যবহৃত হত।
কীলক লিপি তৈরির পদ্ধতি
কাঁচা মাটির পাটাতনে কীলক বা বাটালি দিয়ে রেখাচিত্র এঁকে তারপর সেই মাটি রােদে পুড়িয়ে তারা কীলক লিপি তৈরি করত।
কীলক লিপি লেখার পদ্ধতি
কিউনিফর্ম বিভিন্ন
সাংকেতিক চিহ্ন ও চিত্রের সমন্বয়ে লেখার পদ্ধতি। এটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করে গঠিত কোনো বর্ণমালা নয় এবং এতে নির্দিষ্ট বা ধরাবাঁধা কোনো অক্ষরও নেই। নির্দিষ্ট অক্ষরের পরিবর্তে ৬০০ থেকে ১০০০ -এর মতো কীলক আকৃতির শব্দ বা তাদের অংশের শেপ ব্যবহার করে লেখা হত।
কীলক লিপি বা কিউনিফর্ম লিপির আবিষ্কর্তা
প্রাচীন মেসােপটেমিয়ার মানুষেরা মনে করতেন যে, নেবাে নামক দেবতাই এই লিপি পদ্ধতির আবিষ্কর্তা।
কীলক লিপির নামকরণ
বিখ্যাত লিপি বিশারদ টমাস হাইড এই লিপির নামকরণ করেন কিউনিফর্ম। লাতিন ভাষায় ‘Cuneus’ শব্দের অর্থ পেরেক বা কীলক বা বাটালি এবং ‘forma’ শব্দের অর্থ আকৃতি। কীলকের মতাে খোঁচা খোঁচা চেহারার জন্যই এর নাম কীলক লিপি।
কীলক লিপির বিবর্তন
প্রথম যুগে এটি চিত্রলিপি থাকলেও
পরবর্তীকালে এটি ক্রমে ক্রমে ভাবলিপি ও ধ্বনিলিপিতে পরিবর্তিত হয়।
কীলক লিপিতে ব্যবহৃত ভাষা
ব্যাবিলনীয় এবং আসিরীয় – এই দুই প্রধান মেসােপটেমীয় ভাষা পাথরের ওপর বা কাদার টালির ওপর লেখা হত এই লিপিতেই। পারস্যদেশে আর্যদের প্রাচীন পারসিক ভাষা লেখার জন্যও এই লিপি ব্যবহৃত হত।
কীলক লিপির নমুনা
এই কীলক লিপির সবচেয়ে প্রাচীন নমুনাটি (প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বছরের পুরানাে) পাওয়া গেছে উরুক শহরে। তাছাড়া প্রাচীন সুমেরের নিসপুরে একটি মন্দিরের নীচে একটি সিলমােহর পাওয়া গেছে যা প্রায় পঞ্চাশ হাজার কিউনিফর্মে লেখা।
কীলক লিপির উল্লেখযোগ্য কাজ
হামুরাবির আইনবিধি এই লিপির লিখন পদ্ধতিতেই লিপিবদ্ধ করা হয়।
কীলক লিপির ব্যবহার
প্রাচীন যুগে কিউনিফর্ম খুবই জনপ্রিয় লিখন পদ্ধতি ছিল। সুমেরীয় ও আক্কাদিয়ান বাদে অ্যাসিরিয়ান, ব্যাবিলনিয়ান, এব্লেইট, আমোরাইট, অ্যালামাইট, হাত্তিক, হুররিয়ান, উরার্তিয়ান, হিট্টাইট, লুউইয়ান ভাষা এই লিখন পদ্ধতিতে লেখা হত।
কীলক লিপির লিপির সংস্কার
কিউনিফর্ম লিপিকে প্রথম সংস্কার করেন পারস্য সম্রাট দরায়ুস।
কীলক লিপিতে প্রাপ্ত নমুনার পরিমাণ
প্রাচীন সভ্যতার বিভিন্ন অঞ্চলের মাটি খুঁড়ে ৫ – ১০ লাখ
কিউনিফর্ম ফলক বা ট্যাবলেট পাওয়া গেছে।
কীলক লিপির পাঠোদ্ধার
এই লিপির পাঠোদ্ধারের সূচনা করেন আইরিশ পাদ্রি এডওয়ার্ড হিংকস।
কীলক লিপিতে বর্ণিত বিষয়
(১) এই লিপির বেশির ভাগ ফলক সাংসারিক সাধারণ হিসাব বা শস্য গণনার জন্য ব্যবহৃত হত।
(২) কিছু শিলালিপিতে প্রাচীন মেসোপটেমীয় জীবনের সূক্ষ্ম ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায়।
(৩) কিছু কিউনিফর্ম লিপি জটিল জ্যোতির্বিদ্যার গণনায় ব্যবহৃত হত।
(৪)
ব্যাবিলনীয়দের তিনটি কিউনিফর্ম থেকে সবচেয়ে প্রাচীন রন্ধন প্রণালীর সন্ধান পাওয়া যায়। এই বিশেষ শিলালিপিতে স্টিউ ও সুপের জন্য ২৫টি রেসিপির (মাংস ও নিরামিষ উভয়) কিছু নির্দেশাবলি সহ বর্ণনা রয়েছে। তবে কোনো পরিমাপ বা কত সময় রান্না করতে হবে
তা লেখা নেই।
উপসংহার :- বর্তমানে এই লিপি বিলুপ্ত। তবে ব্রিটিশ জাদুঘরসহ বার্লিন, ইরাক, তুরস্ক ইত্যাদি দেশের জাদুঘরেও কিউনিফর্ম ট্যাবলেট সংরক্ষিত আছে।
(FAQ) কীলক লিপি বা কিউনিফর্ম লিপি সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
১. সুমেরীয় লিপির নাম কি?
কিউনিফর্ম বা কীলক লিপি।
২. কিউনিফর্ম লিপির আবিষ্কর্তা কে?
মেসোপটেমিয়ার অধিবাসীদের মতে, নেবো নামক দেবতা।
৩. কিউনিফর্ম লিপির অপর নাম কী?
কীলকাক্ষর বা বাণমুখ লিপি।
MORE RELATED POSTS
উপভাষা কাকে বলে? কয় প্রকার ও কি কি?? তাদের সীমানা নির্ধারণ কর।
ভাষা কাকে বলে? ভাষার বৈশিষ্ট্য ও অংশ
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য 1st semester 1 ও 2 paper suggetion
পারিভাষিক শব্দ কি বা কাকে বলে | পারিভাষিক শব্দের প্রয়োজনীয়তা ও পরিভাষা তালিকা
ধ্বনি পরিবর্তনের রীতি | dhoni poribortoner riti mcq|primary TET
ভারতীয় ভাষা পরিষদ l Bhartiya -arya Bhasha
জীবনস্মৃতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । rabindra nath tagor jibon sriti
বরেন্দ্রী উপভাষার অঞ্চল বা এলাকা উল্লেখ করে এই উপভাষার রূপতাত্ত্বিক ও ধ্বনিতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য লেখ।
সামাজিক গোষ্ঠীর সংজ্ঞা , বৈশিষ্ট ও গুরুত্ব
প্রাথমিক গোষ্ঠী ও গৌণ গোষ্ঠীর পার্থক্য গুলো আলোচনা কর।
সামাজিকীকরণ কি l samajikikoron ki সামাজিকীকরণ কি l samajikikoron ki l সামাজিকীকরণে পরিবারের ভূমিকা
prathomik ghostir songa o boisisto in bengali l প্রাথমিক গোষ্ঠীর ধারণা , বৈশিষ্ট ও গুরুত্ব।
সামাজিক পরিবর্তন কাকে বলে? সামাজিক পরিবর্তনের উপাদানসমূহ আলোচনা করো।
সামাজিক স্তরবিন্যাস কী? সামাজিক স্তরবিন্যাসের ধরন কী কী?
সামাজিক পরিবর্তনের কারণসমূহ আলােচনা কর।
বর্ণপ্রথার বৈশিষ্ট্য কী? 'বর্ণ' ও ‘জাতি'-র ধারণার মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ কর।
B.A. (Hons.) Bengali, Bachelor of Arts Honours in Bengali, Syllabu…
WB TET Preparation Tips 2023, Study Material
Philosophy Short Essay Questions | My Best Writer
Videosহাট্টিমাটিম টিম - Hattimatim Tim and more | Bengali Rhymes Collection -1
করোনা l coronavirus l সময়ে বিদ্যালয়ের অবস্থা । পার্ট-1
করোনা l coronavirus l সময়ে বিদ্যালয়ের অবস্থা । পার্ট -2
Classes
Mock Tests
Crack Exams
Website Links click here
Terms & Conditions Privacy Policy
STUDY CARE
Whatsapp Ask a Doubt
Studycare0365.blogspot.com
Jangipur,Murshidabad
West Bengal, 742213
Call +91 7908497874
Kajemshaikh0365@gmail.com
Site Links
• About Us
Top Exams
• UPSC Exams
• Teaching Jobs
• Railway Exams
• Banking Exams
Comments
Post a Comment
If you have any doubts, let me know or write us Kajemshaikh0365@gmail.com